জেরিন রহমান ডাক্তার। বাবা-মার অনুরোধ সত্ত্বেও বিয়ে করতে চান না। কারণ, পত্র-পত্রিকা আর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যৌতুক ও নারী নির্যাতন বিষয়ে বিভিন্ন ঘটনা দেখে বিয়ে সম্পর্কে তার একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। অবশেষে তার বাবা-মা বুঝিয়ে জেরিনকে বিয়ে করতে রাজি করান। বিয়ের দিনই তার ধারণা বদলে যায়। কারণ, বাবা-মা জেরিনের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে কিছু আবসাবপত্র কিনে দিতে চাইলে জেরিনের শ্বশুর-শাশুড়ি তা নিতে বিনয়ের সাথে অস্বীকৃতি জানায়। শ্বশুর বাড়িতে এসে তার ধারণা একদম পাল্টে যায়। স্বামী ইরফান হাসানের ভালোবাসা এবং শ্বশুর-শাশুড়ির আদর-স্নেহ তাকে বিমোহিত করে।
ইদ্রিস আলী দামপাড়া ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান। বংশ মর্যাদাও ছিল সবার উপরে। হঠাৎ একটি সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ নিহত হন। গুরুতর আহত হলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় তাঁর বড় ছেলে রাইহান। রাইহানকে সেবা করার মতো নিকটআত্মীয় কেউ ছিল না। কিন্তু পাশের বাড়ির হাতেম চৌকিদারের মেয়ে বিউটি তাকে সেবা দিয়ে, সাহস আর ভালোবাসা দিয়ে বাঁচিয়ে তোলে। এর বিনিময়ে তার কপালে জোটে কলঙ্কের দাগ, বঞ্চনা আর শারীরিক নির্যাতন।
আমিনুর সাহেব দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। প্রবাসের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন শেষে তিনি নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। গ্রামের মানুষের অভাব-অনটন দেখে তিনি মর্মাহত হন। গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ প্রায়শই তার কাছে সাহায্য চাইতে আসেন। কিন্তু তিনি কাউকে সাহায্য করেন না। তিনি ভাবেন, দুই-চার হাজার টাকা সাহায্য করে কারো ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। বরং তারা আমার কাছে ছোটো হবেন। একদিন তিনি এলাকার যুবক-যুবতীদের নিয়ে সভায় বসেন। সিদ্ধান্ত হয় এলাকার সমস্ত পুকুর লিজ নিয়ে সমবায় ভিত্তিতে মাছ চাষ করবেন। গরু ও মুরগির ফার্ম গড়ে তুলবেন। অল্প দিনের মধ্যেই এলাকার দৃশ্যপট বদলে যায়। এলকার সমস্ত মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে।
অনেকবার ভেবেছে মুক্তিযুদ্ধে যাই। কিন্তু একটি সন্তান কোলে, আরেকটি পৃথিবীতে আসি আসি করছে। তাই সালেহীনের যুদ্ধে যাওয়া হয়নি। রাজ্যের অস্বপ্তি নিয়ে সে ৯টা-৫টা সরকারি অফিস করে। তবে তার স্ত্রী লক্ষ করে সালেহীন সন্ধ্যায় কোথায় যেন যায়। একদিন রাতে পাক বাহিনী তার বাসায় হানা দিলে তার স্ত্রীর অনুমানই সত্যি হয়।
তারুণ্য অপরাজেয়, নির্ভীক। এ বয়স অদম্য দুঃসাহসে সকল বাধা-বিপদকে পেরিয়ে যাওয়ার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য প্রস্তুত। এদের ধর্মই হলো আত্মত্যাগের মহানমন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়া, আঘাত সংঘাতের মধ্যে রক্ত-শপথ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। যা আমরা দেখেছি ৫২-এর ভাষা আন্দোলনে, ৬৯ আর ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে। এ চেতনার প্রতিফলন দেখেছি ২৪ শের জুলাই-আগস্টের গণ আন্দোলনে। বাঁক বদলের ইতিহাসে তারুণ্যই অনিবার্য হাতিয়ার।
আইমান রহমান বিদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে আসে। সে নিজ গ্রামের যুবসমাজকে নিয়ে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। তারা প্রতিজ্ঞা করে এলাকা থেকে সকল প্রকার অনিয়ম, অন্যায়, অবিচার দূর করবে। নির্বিচারে গাছ কাটা, নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলা, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে তারা সোচ্চার হয়। কিন্তু প্রভাবশালী মহলের চক্রান্তে একটি মিথ্যা মামলায় আইমান এখন জেলে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্বন্ধে সাধারণ মানুষ খুবই অসচেতন। এটি যে তাদের দেহ ও মনের উপর কী পরিমাণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তা তারা জানে না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলো ক্ষতিকর দিকটি জেনেও এর প্রচার ও প্রসারের জন্য নিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নীতি, আদর্শ, স্বাস্থ্য কিংবা মানুষের জীবন নয়। কোম্পানিগুলোর কাছে মুখ্য তাদের মুনাফা ও অস্তিত্ব।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের একজন বীর শহিদ তার মা-বাবাকে চিঠি লিখে 'মা, আমি মিছিলে যাচ্ছি। আমি নিজেকে আর আটকিয়ে রাখতে পারলাম না। সরি আব্বুজান! তোমার কথা অমান্য করে বের হলাম। স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। আমাদের ভাইয়েরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নেমে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিচ্ছে। একটি প্রতিবন্ধী কিশোর, ৭ বছরের বাচ্চা, ল্যাংড়া মানুষ যদি সংগ্রামে নামতে পারে, তাহলে আমি কেন বসে থাকবো। আমার মনে হয় স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে না থেকে সংগ্রামে নেমে গুলি খেয়ে বীরের মতো মৃত্যু অধিক শ্রেষ্ঠ.....।
জননী এগ্রোর মালিক হাবিব সাহেব। এর ব্যবস্থাপক আব্দুল কাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হলেও হাবিব সাহেব কাদেরকে নিজের সন্তানের মতোই স্নেহ করেন। তাই ব্যবসার সমস্ত ভার হাবিব সাহেব কাদেরকে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকেন। কিছু দিনের জন্য হাবিব সাহেব বিদেশে যান। ব্যবসার সমস্ত দায়িত্ব দিয়ে যান কাদেরকে। এদিকে কাদের হাবিব সাহেবের শত্রুদের সাথে হাত মিলিয়ে জাল দলিলপত্র করে জননী এগ্রোর মালিক বনে যায়। বিদেশ থেকে এসে হাবিব সাহেব স্তম্ভিত হয় যান। মানুষ এত বড় বিশ্বাসঘাতক হতে পারে তিনি বিশ্বাসই করতে পারেন না।