ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায়কে বলা হয় ভারতের নবজাগরণের পথিকৃৎ। রামমোহনের সমকালীন সমাজে গোঁড়ামি, অন্ধবিশ্বাস ও জাতিভেদসহ নানা কুপ্রথা প্রচলিত ছিল। একটি মানবিক ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনের জন্য তিনি ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁর আন্দোলনের ফলে বৃটিশ সরকার সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করে। এতে নারীকে স্বামীর চিতায় জীবন্ত দাহ করার অমানবিক প্রথার অবসান ঘটে।
জলাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে হরিপুর গ্রামের মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়ে। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী কালাম সাহেব গ্রামের মানুষকে নিয়মিত দান-খয়রাত ও আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন। গ্রামের আরেক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী জামাল সাহেব নিজস্ব অর্থে একটি প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে নতুন পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। এতে গ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যার অবসান ঘটে। সারা বছর চাষাবাদ করা সম্ভব হয় বলে এখন আর হরিপুর গ্রামের মানুষের আর্থিক সাহায্য গ্রহণের প্রয়োজন হয় না।
১৯৭১ সালের পঁচিশে মার্চের রাতের গণহত্যার জের ধরে ২৬ মার্চ দিনের বেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন এলাকায় আগুনের কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছিল। কারফিউয়ের মধ্যেও বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ দলে দলে পালাতে শুরু করে। অনেকে পরিচিতজনদের খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করছিলেন। পুরো ঢাকায় ছড়িয়ে ছিল ধ্বংসযজ্ঞের নমুনা। যেখানে সেখানে পড়েছিল মৃতদেহ।
মজলিশপুর গ্রামের তাহের আলি হঠাৎ দাবি করে যে সে স্বপ্নে এক লতা-পাতার ঔষধের সন্ধান পেয়েছে যা দ্বারা যে-কোনো রোগের চিকিৎসা সম্ভব। তার এ লতা-পাতার চিকিৎসার কথা চারিদিকে প্রচার হতে থাকে। অচিরেই আশেপাশের গ্রাম ও দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন দলে দলে তাঁর কাছে আসতে থাকে। লতা-পাতার ঔষধ বিক্রির টাকায় এক সময়ের হতদরিদ্র তাহের আলির আর্থিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি হতে থাকে।
তালতলা গ্রামের আশেপাশে কোনো মাধ্যমিক স্কুল না থাকায় তিন কিলোমিটা দূরের স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা চালিয়া যেতে হয় মুশফিককে। উচ্চশিক্ষা শেষে আজ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েও সেই বিগত দিনগুলোর কথা ভুলে যায়নি সে। অনেক দিন লেগে থেকে শিক্ষা বিভাগের অনুমোদন পেয়ে অবশেষে নিজ গ্রামে মুশফিক একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। গ্রামের সজ্জন শহিদুল মাস্টার জায়গা দিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেন।
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ ছিল ইতিহাসের অন্যতম রক্ষক্ষয়ী যুদ্ধ। একদিকে সম্মিলিত মুসলিম বাহিনী, অন্যদিকে মারাঠারা। ইব্রাহিম কার্দি ও জোহরা বেগম স্বামী-স্ত্রী হয়েও যথাক্রমে মারাঠা ও মুসলিম শিবিরের পক্ষে সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। জোহরা বেগম স্বামী ইব্রাহিম কার্দিকে মুসলিম শিবিরে যোগ দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু ইব্রাহিম কার্দি স্পষ্ট জানিয়ে দেন-"যে ফিরে যাবে সে আমি হব না। সে হবে বিশ্বাসঘাতক। সে হবে ইব্রাহিম কার্দির লাশ। আমার সংকটের দিনে যারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে, কর্মে নিযুক্ত করেছে, ঐশ্বর্য দান করেছে সে মারাঠােেদর বিপদের দিনে আমি চুপ করে বসে থাকবো? পদত্যাগ করবো? সে হয় না, জোহরা।"
মহীশূরের টিপু সুলতান ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় চরিত্র। তিনি বারবার বিভিন্ন লড়াইয়ে ইংরেজদের ধরাশায়ী করেন। চতুর ইংরেজরা পেরে না উঠে টিপুর দরবারের এক উচ্চভিলাশী সেনাপতিকে হাত করে নেয়। এই সেনাপতি টিপুর সব খবর ইংরেজদের কাছে পৌছে দিত। সেই সেনাপতি দুর্গের দরজা খুলে দিয়ে ইংরেজদের প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। নিজ সেনাপতির বিশ্বাসঘাতকতায় অবশেষে টিপু সুলতান ইংরেজদের হাতে প্রাণ হারান।