ইশান, আবিদ ও দিয়াত তিন বন্ধু। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছিল। আরিফ বলল, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সমঝোতার কোনো উদ্যোগ নেই। এক দলের সাথে আরেক দলের সম্পর্ক ধ্বংসাত্মক এবং তাদের মাঝে বিরাজ করে দলাদলি, হানাহানির মানসিকতা। দিয়াত বলল, শুধু যে অন্য দলের সাথে তা নয় বরং দলগুলোর অভ্যন্তরে দলীয় কোন্দল বিরাজমান। ইশান বলল, এ পরিস্থিতিতে প্রধান প্রধান দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন এবং মদিনা সনদের মতো একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, যার মাধ্যমে দেশের ঐক্য, সংহতি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হবে।
মদিনা সনদ রাষ্ট্রের ঐক্য, সংহতি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করে। ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মদিনায় পৌঁছানোর পর রাসুল (স) দ্বিধাবিভক্ত মদিনাবাসীকে ঐক্যসূত্রে আবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি সকলের মধ্যে সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য প্রণয়ন করেন ঐতিহাসিক মদিনা সনদ, যা বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে পরিগণিত।
এ সনদে তিনি আল্লাহর আইনের ভিত্তিতে মদিনা রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করেন। এ সনদের ফলে মদিনা রাষ্ট্রে স্বৈরতন্ত্রের পরিবর্তে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। মদিনা সনদের অসামান্য মাহাত্ম্য ও অপূর্ব মননশীলতা শুধু তৎকালীন যুগেই নয়, সর্বযুগে ও সর্বকালের শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক। এ সনদে সাক্ষরকারী গোত্রগুলো অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী ঐকমত্যে পৌঁছে। এ সনদের পথ ধরেই মদিনা রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি সাধন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। এ সনদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ যথাযথরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়। সকল নাগরিক একে অন্যের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে জানতে পারে, পাশাপাশি স্বৈরাচারী শাসনের অবসান হয় এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই যে কোনো রাষ্ট্র সুশৃঙ্খল এবং সংহতিপূর্ণ সমাজ গঠন করতে চাইলে নির্দ্বিধায় মদিনা সনদের অনুকরণ করা উচিত।