রূপনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দারা জীবনধারণের প্রয়োজনীয় সব খাদ্য ও উপকরণ নিজেরাই উৎপাদন করে। প্রয়োজনীয় কোনো কিছু না পাওয়া গেলে তারা পার্শ্ববর্তী আকবরগঞ্জ গ্রামের মানুষদের সাথে পণ্য বিনিময় করে। রূপনারায়ণপুর গ্রামের জমিগুলোতে আগে যৌথ মালিকানা থাকলেও এখন ব্যক্তি মালিকানা বিদ্যমান।
উদ্দীপকের রূপনারায়ণপুর গ্রামের অবস্থার সাথে নব্যপ্রস্তর যুগের সমাজব্যবস্থার মিল পাওয়া যায়।
প্লাইস্টোসিন যুগের শেষভাগ বা হলোসিন যুগের প্রারম্ভ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব সাড়ে তিন হাজার বছর পর্যন্ত নব্যপ্রস্তর যুগের সময়কাল ব্যপ্ত ছিল। এ যুগের মানুষের প্রধান অবদান কৃষিকাজ ও পশুপালন শরু করা। এ যুগের মানুষ প্রকৃতিকে সম্পূর্ণভাবে নয়, বরং কিছুটা আয়ত্তে এনে কৃষি কাজের মাধ্যমে নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে শিখেছিল। মানব সভ্যতার বিকাশে কৃষির মতোই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে পশুপালন। নব্যপ্রস্তর যুগের মানুষ বন্য পশুকে পোষ মানানোর মধ্য দিয়ে প্রকৃতির ওপর আধিপত্য ও কর্তৃত্ব শুরু করেছিল। নব্যপ্রস্তর যুগেই স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছিল। এ যুগের এক একটি গ্রাম ছিল এক একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পৃথক ইউনিটের মতো। নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য গ্রামবাসীদের অন্য গ্রামের ওপর নির্ভর করতে হতো না। নিজেদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি তারা নিজেরাই উৎপাদন করতে পারত। এছাড়া বাসস্থানের নিশ্চয়তা, খাদ্যের নিয়মিত যোগান, বিনিময় ব্যবস্থার প্রবর্তন প্রভৃতির ফলে এ যুগের মানুষ যাযাবর জীবন ত্যাগ করে স্থায়ী বসবাসের জীবন শুরু করেছিল। আর স্থায়ী বসবাসের জীবন শুরু হওয়ায় সমাজে পারিবারিক কাঠামো গড়ে উঠেছিল।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, রূপনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দারা জীবনধারণের প্রয়োজন সব খাদ্য ও উপকরণ নিজেরাই উৎপাদন করে। যেমনটি উপরের আলোচনায় ফুটে ওঠা নব্যপ্রস্তর যুগের সমাজব্যবস্থায় দেখা যায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রূপনারায়ণপুর গ্রামের অবস্থা নব্যপ্রস্তর যুগের সমাজব্যবস্থার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।