হ্যাঁ, আমি এ বিষয়ে একমত যে, আধুনিক সভ্যতার বিকাশ সাধনে উদ্দীপক দ্বারা নির্দেশকৃত উপাদান তথা লৌহ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিধায় লৌহকে আধুনিক সভ্যতার মূলভিত্তি বলা হয়। নিচে এ বিষয়ে আমার যুক্তি উপস্থাপন করা হলো-
আমরা জানি, লোহার ব্যবহার মানবসভ্যতার বিকাশে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কেননা ব্রোঞ্জের তুলনায় লৌহ মজবুত এবং দামে সস্তা। এর ব্যবহারও সহজসাধ্য। কৃষির উদ্ভব যেমন মানুষের জীবনধারাকে পাল্টে দিয়েছিল, তেমনি লৌহের ব্যবহারও কালক্রমে মানুষের জীবনধারায় বিরাট পরিবর্তন বয়ে আনে। লৌহ নির্মিত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে ফসল উৎপাদন আগের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। লৌহভিত্তিক শিল্পকারখানা গড়ে ওঠায় মানুষের কর্মসংস্থানের নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে শুরু করে প্রাত্যহিক জীবনের সব ক্ষেত্রে লৌহের ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। ফলে আয়ও বৃদ্ধি পায়। আবার ঘরবাড়ি নির্মাণ, আসবাবপত্র, রাস্তাঘাট, হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি প্রভৃতি নির্মাণে লৌহের ব্যবহার নগরায়ণ ও শিল্পায়নকে তরান্বিত করে। এর পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি, শিল্পকলা ও স্থাপত্য শিল্পেও লৌহের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। সর্বোপরি লৌহের আবিষ্কার ও ব্যবহার আধুনিক সভ্যতার সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্যই বলা হয়ে থাকে যে, আধুনিক মানব সভ্যতার ভিত্তি লৌহ যুগের গর্ভেই অঙ্কুরিত হয়েছিল।
উপরের আলোচনা শেষে দৃঢ়তার সাথেই বলা যায় যে, লৌহের ব্যবহারের ফলেই আধুনিক সভ্যতার মূলভিত্তি স্থাপিত হয়েছে।