সোমা ফাল্গুনী পূর্ণিমার বিশেষ তিথিতে রঙের খেলায় মেতে উঠেছে। সকল গ্লানি ভুলে এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছোট-বড় সকলে গুঁড়া রং মাখামাখি করে আনন্দ করছে। অপরদিকে রীপাদের বাড়ির সামনে মন্দিরের মাঠে এক ধর্মীয় নাম সংকীর্তনের আয়োজন করেছে। ধর্মীয় নাম চলবে কয়েক প্রহরব্যাপী। বহু দূরদূরান্ত থেকে সকল জাতিভেদ ভুলে সবাই এ উৎসবে অংশগ্রহণ করছে। মন্দিরের মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
রীপাদের বাড়ির সামনে মন্দিরের মাঠে যে অনুষ্ঠানটি পালিত হচ্ছে সেটি হলো নামযজ্ঞ এবং এর যথেষ্ট সামাজিক গুরুত্ব রয়েছে। নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরামচন্দ্রের পূজা করা হয়। বিভিন্ন সুরে, ছন্দে, তালে কৃষ্ণনাম এবং রামনাম কীর্তন করা হয়। উদ্দীপকের রীপাদের বাড়ির সামনে মাঠে যে ধর্মীয় নাম সংকীর্তনের আয়োজন করা হয়েছে সেটি নামযজ্ঞকেই নির্দেশ করছে। কয়েক প্রহরব্যাপী এ নামযজ্ঞ চলতে থাকে। শ্রীকৃষ্ণ ভগবানের অবতাররূপে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মানুষের জন্ম-মৃত্যুর ব্যাখ্যা দেন। শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ বাণী থেকে মানবজাতি আত্মার মুক্তি লাভের চেষ্টা করে। হিন্দুরা বিশ্বাস করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম নিলে তিনি খুশি হন আর তাতে পুণ্য হয়। এজন্য জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে শ্রীকৃষ্ণের নামযজ্ঞানুষ্ঠানে একত্রিত হয়ে বিভিন্ন সুরে, ছন্দে, তালে কৃষ্ণনাম জপ করে এবং কৃষ্ণনামের কীর্তন করে। তাই ধর্মীয় দিক থেকে নামযজ্ঞানুষ্ঠান খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। অপরদিকে, পারিবারিক জীবনে মানুষ অনেক দুঃখ-কষ্ট পেয়ে থাকে। নামযজ্ঞে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে মানুষ এসব দুঃখ-কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে। এছাড়া সামাজিকভাবেও নামযজ্ঞানুষ্ঠানটি তাৎপর্য বহন করে। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে মানুষ দূরদূরান্ত থেকে আসে এক উদ্দেশ্য নিয়ে যার ফলে মানুষের মধ্যে মিলনমেলা তৈরি হয়। নানা জাতি, বর্ণের মানুষ সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একাত্ম হয়ে যায়। একে অপরের সাথে মনের দুঃখ-সুখের বিনিময় করে। যার কারণে সামাজিক বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়।
সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে বলা যায় যে, ধর্মীয়, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে উদ্দীপকে রীপাদের বাড়ির সামনে অনুষ্ঠিত নামযজ্ঞানুষ্ঠানটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।