সুমিতাদের বাড়িতে প্রতিবছর হেমন্ত ঋতুতে একটি ধর্মাচারের আয়োজন করা হয়। উক্ত আয়োজনটি মূলত তার ভাই হৃদয়কে কেন্দ্র করে। এ উপলক্ষে হৃদয়কে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ানো হয়। অন্যদিকে শরনদের গ্রামে প্রতিবছর বসন্ত ঋতুতে একটি ধর্মানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যদিও অনুষ্ঠানটি মূলত বৈষ্ণবদের কিন্তু তাতে সকল ধর্মের লোেকই আবির খেলায় অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানটি উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী মেলারও আয়োজন হয়। মেলায় অনেক লোকের সমাগম ঘটে।
সুমিতাদের বাড়িতে প্রতিবছর যে ধর্মাচারের আয়োজন করা হয় সেটি হলো ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। এ দিনটি অত্যন্ত পবিত্র। ভাই-বোনের সুমধুর সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয় এ উৎসবকে কেন্দ্র করে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, সুমিতাদের বাড়িতে প্রতিবছর হেমন্ত ঋতুতে একটি ধর্মাচার আয়োজিত হয়। এখানে মূলত হেমন্ত ঋতু বা কার্তিক মাসে উদ্যাপিত ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উৎসবকে নির্দেশ করা হয়েছে। ভাই হৃদয়ের জন্য সুমিতা যেভাবে আচারটি পালন করেছে এর প্রেক্ষিতে তাকে যমুনাদেবীর প্রতিচ্ছবি বলা যায়। ধর্মগ্রন্থ পুরাণে উল্লেখ আছে, কার্তিক মাসে শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনাদেবী তাঁর ভাই যমের মঙ্গল কামনায় পূজা করেন। তাঁরই পুণ্যপ্রভাবে যমদেব অমরত্ব লাভ করেন। যমুনাদেবীর পূজার পুণ্য প্রভাবে যমরাজের অমরত্বের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমানকালের বোনেরাও তা অনুসরণ করেন। ঠিক যেমনটি করেছেন উদ্দীপকের সুমিতা। এদিন বোনেরা উপবাস থেকে ভাইয়ের কপালে অনামিকা আঙুল দিয়ে চন্দন, ঘি, কাজল অথবা দধির ফোঁটা দিয়ে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে বলে-
"ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা,
যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা"
ভাইকে ফল, মিষ্টি, পায়েস, লুচি প্রভৃতি উপাদেয় খাদ্য পরিবেশন করা হয়। উদ্দীপকের হৃদয়ের ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে। তাই বলা যায়, সুমিতাদের বাড়িতে প্রতিবছর ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ধর্মাচারেরই আয়োজন করা হয়।