সুমিতাদের বাড়িতে প্রতিবছর হেমন্ত ঋতুতে একটি ধর্মাচারের আয়োজন করা হয়। উক্ত আয়োজনটি মূলত তার ভাই হৃদয়কে কেন্দ্র করে। এ উপলক্ষে হৃদয়কে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ানো হয়। অন্যদিকে শরনদের গ্রামে প্রতিবছর বসন্ত ঋতুতে একটি ধর্মানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যদিও অনুষ্ঠানটি মূলত বৈষ্ণবদের কিন্তু তাতে সকল ধর্মের লোেকই আবির খেলায় অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানটি উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী মেলারও আয়োজন হয়। মেলায় অনেক লোকের সমাগম ঘটে।
সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে শরনদের গ্রামে অনুষ্ঠিত ধর্মানুষ্ঠান বা দোলযাত্রার প্রভাব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
ধর্ম মানুষের নৈতিক মূল্যবোধের সৃষ্টি করে। আর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়। তা যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানই হোক না কেন। যেমন- দোলযাত্রা উৎসবে শরনদের গ্রামের সকল লোকই আবির খেলায় অংশগ্রহণ করে। এখানে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে অংশগ্রহণের ফলে সকলের মধ্যে সৌহার্দ ও সম্প্রীতির সৃষ্টি হয়। সকলের মধ্যে এক সাম্প্রদায়িক বন্ধন তৈরি হয় এবং জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে। দোলযাত্রা উপলক্ষে একে অপরকে রং মাখিয়ে দেয়। এভাবে আবির মাখানোর ভিতর দিয়ে সকল শ্রেণি ও স্তরের মানুষের মধ্যে সামাজিক মিলন তৈরি হয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়ে বিভেদ ভুলে যায়। সকলেই হয়ে যায় একাত্ম। শুধুমাত্র দোলযাত্রা নয় সকল ধর্মীয় উৎসবেই এ ধরনের সার্বজনীনতা লক্ষ করা যায়। যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানই সামাজিক সম্প্রীতি ও মিলনের এক অন্যতম মাধ্যম। তাই বলা যায়, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে শরনদের গ্রামে অনুষ্ঠিত ধর্মানুষ্ঠান বা দোলযাত্রার প্রভাব অপরিসীম।