'জুলাই অভ্যুত্থান' বিষয়ে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করুন।
জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪ ছিল একটি ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন। এই আন্দোলনের সূচনা হয় কোটা সংস্কার দাবিতে ছাত্রসমাজের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ থেকে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিতর্কিত মন্তব্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের 'রাজাকারের বংশধর' বলে আখ্যা দেওয়ার পর তা সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত ও জোরালো রূপ নেয়। শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, বুদ্ধিজীবী ও আইনজীবীরা একত্রিত হয়ে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে। আন্দোলনকালে সরকারি দমননীতি, পুলিশের নির্যাতন ও শাসক দলের ছাত্রসংগঠনের সহিংস হামলা জনগণের ক্ষোভকে আরও উসকে দেয়। আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারের ব্যাপক দমন-পীড়ন ও হত্যার প্রতিবাদে 'কমপ্লিট শাটডাউন' কিংবা 'সর্বাত্মক অবরোধ'-এর মতো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ছাত্ররা প্রথমে ৯ দফা পরে ৩ আগস্ট সরকার পতনের ১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ৪ আগস্ট দেশব্যাপী সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে, ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।