কুড়িগ্রামের উলিপুর গ্রামের কৃষকদের আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। আবার সঠিকভাবে কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণেও অসুবিধা হয়। কৃষি কর্মকর্তার কাছে পরামর্শের জন্য গেলে তিনি কৃষকদের নিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে এক ধরনের সমিতি গঠনের পরামর্শ দেন এবং এই সমিতির আইনের বিষয়টিও বুঝিয়ে বলেন।
উদ্দীপকের সংগঠনটি হলো কৃষি সমবায়। কৃষি উন্নয়নে কৃষি সমবায়ের ভূমিকা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি তথা কৃষি কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুরূপে পরিচালনার জন্য যে সমবায় সমিতি করা হয় তাকে কৃষি সমবায় বলে। আমাদের দেশের কৃষকরা খুব দরিদ্র। কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য বীজ, সার, সেচের পানি, জ্বালানী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর টাকা খরচ হয়। এছাড়া কৃষিপণ্য সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ ও প্রক্রিয়াজাত খাতেও প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। আবার উৎপাদিত কৃষি পণ্যের দাম কম হলে কৃষকরা মূলধন ফিরে পায় না। পরবর্তী কৃষিপণ্য উৎপাদনের সময় কৃষকদের আর্থিক সংকট থাকে চরমে, ফলে কৃষিপণ্য ক্রয়সহ উৎপাদন কর্মকাণ্ড, পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হয়।
এসকল কৃষকের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। কিন্তু সমবায় গঠনের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। সমবায়ের সদস্যদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে বড় আকারের পুঁজি গঠন করে উপকরণ সংগ্রহ এবং উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষিতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ও কারিগরি ক্ষেত্রে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন সম্ভব হয়। সমবায়ের মাধ্যমে খন্ড খন্ড জমিগুলোকে একত্রিত করে যৌথভাবে উৎপাদন করার মাধ্যমে ফলন বৃদ্ধি করা যায়। সমবায়ের মাধ্যমেই একমাত্র গ্রামীণ যোগাযোগ, উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎ সুবিধা সৃষ্টি করা সম্ভব। তাছাড়া, রেজিস্ট্রিকৃত কৃষি সমবায় হলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দিতে আগ্রহী হয়।
অতএব বলা যায়, কৃষকরা কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে সহজেই কৃষিঋণ লাভ করে, যা বিভিন্ন উপকরণ ক্রয়, ভূমিতে স্থায়ী উন্নতি সাধন, পণ্যের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন ইত্যাদি কাজে সহায়তা করে।