আরবি এবং নীল দু'জন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাদের উভয়ের বয়স ১৪ বছর। রবির ইচ্ছা ভবিষ্যতে একটা ভালো চাকরি করে তার পরিবারের দুঃখ কষ্ট দূর করবে। অপরদিকে নীলের কন্ঠস্বরে হঠাৎ পরিবর্তন আসায় যে অন্যের সাথে কথা বলতে লজ্জা পায়। নীলের ছোট বোন গুলির বয়স ১২ বছর। ইদানীং ডলি প্রায়ই মন খারাপ করে একা বসে থাকে, সময়মতো খাওয়া-দাওয়া করে না, বিষণ্ণ থাকে
নীল ও ডলির আচরণ পরিবর্তনের কারণ বয়ঃসন্ধিকাল হলেও বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে সে পরিবর্তন ভিন্ন হয়' প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি যথার্থ হয়েছে বলে মনে আমি মনে করি।
বয়ঃসন্ধিকালে সবচেয়ে বেশি দৈহিক বৃদ্ধি ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অনুপাতে পরিবর্তন সংঘটিত হয়। এ সময়ে ছেলেদের অন্ডকোষ বৃদ্ধি ঘটে, বগল ও গুপ্তস্থানে লোমের বৃদ্ধি, কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, দাড়ি জন্মায় এবং প্রথম বীর্যপাত শুরু হয়। অন্যদিকে মেয়েদের ক্ষেত্রে স্তন বৃদ্ধি পায়, গুপ্তস্থানে লোম ওঠে, ঋতুস্রাব শুরু হয় ও অন্যান্য লোমের বৃদ্ধি ঘটে। এ সময়ে ছেলেমেয়েরা মা-বাবা, ভাইবোন, শিক্ষক ও সঙ্গীদের কাছ থেকে কম সমবেদনা পায়। এ সময়ে ছেলেমেয়েরা একাকী থাকতে চায়, লাজুক হয় এবং আত্ম-প্রত্যয়ের অভাব থাকে।
প্রদত্ত উদ্দীপকের বর্ণনায় নীলের বয়স ১৪ বছর এবং তার বোন ডলির বয়স ১২ বছর। বয়ঃসন্ধিকালের বয়ক্রমানুযায়ী তারা উভয়েই বয়ঃসন্ধিকালে অবস্থান করছে। নীলের কন্ঠস্বরের হঠাৎ পরিবর্তন হওয়া; এজন্য কথা বলতে লজ্জা পাওয়া এগুলো বয়ো:সন্ধিকালে ছেলেদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ঘটনা। অন্যদাকে হঠাৎ করে শারীরিক পরিবর্তন আসলে ডলির মতো অনেকেই মন খারাপ করে একা বসে থাকে; সময় মতো খাওয়া-দাওয়া করে না এবং বিষণ্ণ থাকে। এক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক লোকজন ও মা-বাবার সহযোগিতাই ছেলেমেয়েদের এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে খাপ-খাওয়াতে সহযোগিতা করে। তাহলে দেখা যায়, নীল ও ডলির আচরণ পরিবর্তনের কারণ হলো বয়ঃসন্ধিকাল, কিন্তু সে পরিবর্তন বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে ভিন্ন ধরনের।
উদ্দীপকের নীল ও ডলির আচরণ পরিবর্তনের কারণ এক হলেও বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে ভিন্ন। তাই প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।