না, উক্ত জনপদ অর্থাৎ সমতট জনপদটি প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে উন্নত জনপদ ছিল বলে আমি মনে করি না। প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে উন্নত জনপদ ছিল পুণ্ড।
সমতট জনপদটি কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল। এ জনপদে দেব রাজবংশের রাজারা বিভিন্ন ধরনের স্থাপত্য, নির্মাণশৈলী, শিল্পকলা ইত্যাদিতে অবদান রেখেছেন। এছাড়াও এ জনপদের অন্তর্ভুক্ত ময়নামতি অঞ্চল তখনকার সময়ে বৌদ্ধ সংস্কৃতির অন্যতম চর্চাকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। এর নিদর্শনস্বরূপ রয়েছে অনেকগুলো বৌদ্ধ বিহার। যেমন- আনন্দ বিহার, ভোজ বিহার ইত্যাদি। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এ অঞ্চলে এসে তাদের ধর্মীয় শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছিলেন। তাছাড়া গঙ্গা- ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে মেঘনা নদীর মোহনা পর্যন্ত এ অঞ্চলের বিস্তৃতি বিধায় এ জনপদ নৌ-বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে পুণ্ড অন্যতম। পুণ্ড নামে একটি জাতি এ জনপদ গড়ে তুলেছিল। পুণ্ডদের রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল পুণ্ড্রনগর। পরবর্তীতে এর নাম হয় মহাস্থানগড়। মহাস্থানগড় কয়েক শতাব্দীকাল পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন রাজবংশের প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। বর্তমান বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলা জুড়ে ছিল বিস্তৃত ছিল এ পুণ্ড জনপদ। বগুড়া থেকে সাত মাইল দূরে মহাস্থানগড় প্রাচীন পুণ্ড্র নগরীর ধ্বংসাবশেষ বলে পণ্ডিতেরা ধারণা করে থাকেন। সভ্যতার নিদর্শনের দিক থেকে অপরাপর জনপদ অপেক্ষা পুণ্ডই ছিল প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ। পাথরের চাকতিতে খোদাই করা বাংলাদেশের প্রাচীনতম শিলালিপি এখানে পাওয়া গেছে। করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত পুন্ড্রনগরের সাথে জল ও স্থলপথে বাংলার অন্যান্য অংশের বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং প্রাচীন যুগে জনপদটি ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত ছিল। চীনের সঙ্গে মগধের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলের ওপর পুণ্ড্রবর্ধনের উপস্থিতি এ গুরুত্ব আরো বাড়িয়ে দেয়। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এর বিবরণীও এ অঞ্চলের সমৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, সমতট নয় পুণ্ড ছিল বাংলার সবচেয়ে উন্নত জনপদ।
আপনি কি খুঁজছেন “বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা নবম-দশম শ্রেণি PDF”, CQ/MCQ প্রশ্ন–উত্তর, কিংবা সহজ ও ব্যাখ্যাসহ পাঠ বিশ্লেষণ?
✅ SATT Academy–তে আপনি পাবেন:
🔗 বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা PDF ডাউনলোড
(লিংকে ক্লিক করে সরকারি বইটি অনলাইনে পড়তে বা ডাউনলোড করতে পারবেন)
✔️ ১০০% ফ্রি, বিজ্ঞাপনবিহীন ও আপডেটেড কনটেন্ট
✔️ পরীক্ষা–উপযোগী সাজানো প্রশ্ন–উত্তর ও ব্যাখ্যা
✔️ চিত্র, টাইমলাইন ও ভিজ্যুয়াল ব্যাখ্যা সহ শেখা আরও সহজ
✔️ মোবাইল ফ্রেন্ডলি ও দ্রুত লোডিং ওয়েবসাইট
✔️ শিক্ষার্থী–শিক্ষক–অভিভাবক সবার জন্য কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম
ইতিহাস শুধু তথ্য নয়—এটা আমাদের পরিচয়, আত্মবিশ্বাস ও ভবিষ্যতের পথনির্দেশক।
SATT Academy–এর মাধ্যমে ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা হয়ে উঠুক আপনার জানা ও বোঝার আনন্দময় একটি যাত্রা।
📚 SATT Academy – শেখা হোক সত্য, সুনির্দিষ্ট ও সবার জন্য উন্মুক্ত।