রুবিনা সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিন বছর আগে ছোট ছেলে আতিককে দেখাশোনা করার জন্য তিনি বিথি নামের ১৩ বছরের একটি মেয়েকে বাসায় আনেন। মেয়েটি বাসায় আসার পর থেকে রুবিনা বেশ কিছু জিনিস খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অর্থাৎ বিথি তার জিনিসগুলো চুরি করে সরিয়ে রাখত। একদিন রুবিনার গয়নার ওপর বিথির লোভহলো সুযোগ বুঝে সে গয়নাগুলো চুরি করল। ছোট্ট আতিক বিষয়টি দেখে ফেলে এবং মাকে বলে দেবো বলে চিৎকার করে। তাই বিথি বটি দিয়ে আতিকের মাথায় আঘাত করে গয়না নিয়ে পালিয়ে যায়। বাসায় এসে ছেলের মরদেহ দেখে শোকে পাগল প্রায় রুবিনা সরকার।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বিথির মতো অপরাধীদের জন্য কাজ করছে।
ওয়ার্ল্ড ভিশন পৃথিবী জুড়ে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে নিবেদিত একটি সংগঠন। এটি খ্রিষ্টান ধর্মের আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৫০ সালে কোরীয় যুদ্ধে পরিত্যক্ত শিশুদের পরিচর্যার মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে সংগঠনটি দারিদ্র্য বিমোচন, শিশু কল্যাণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, ত্রাণ ও পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। উদ্দীপকের বিথির মতো অপরাধীদের সংশোধন ও উন্নয়নের জন্যও সংস্থাটি নিরলসভাবে কাজ করছে।
১৩ বছর বয়সের বিথি প্রথমে রুবিনার জিনিস চুরি করত। এরপর তার লোভ হয় রুবিনার গয়নার ওপর। অবশেষে সে রুবিনার ছেলে আতিককে খুন করে গয়না নিয়ে পালায়। বিথি চুরি এবং হত্যার মতো অপরাধে অপরাধী। এ ধরনের কিশোর অপরাধীর জন্য ওয়ার্ল্ড ভিশন কিশোর-কিশোরী সংশোধন ও উন্নয়ন নামে একটি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর আওতায় রয়েছে কিশোর-কিশোরীর জন্য সচেতনতা ও উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম (Motivation) এবং স্বাস্থ্য পরিচর্যামূলক সেবা। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সংস্থানটি ওয়ার্কশপসহ বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করে থাকে। এ কর্মসূচির অধীনে এ পর্যন্ত ১০,০০০ পুলিশ কর্মকর্তা বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও শিশু অধিকার বিষয়ক আলোচনায় অংশগ্রহণ করে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০০ কিশোর অপরাধী উপকৃত হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, বিথির মতো কিশোর অপরাধীর সংশোধনে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।