নাজিম মুন্সি এ বছর পাট ক্ষেত থেকে ব্যাপক ফলন পেল। কিন্তু এ বছর তার এলাকায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায়- নদী নালা, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। ফলে সে পাট কাটার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ল। এলাকার কৃষি কর্মকর্তা তাকে অল্প পানি ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের উপায় বলে দিল।
উদ্দীপকে উল্লিখিত পদ্ধতিটি হলো পাটের রিবন রেটিং। পাটের রিবন রেটিং হলো বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত স্বল্প পানিতে অল্প সময়ে পাট পচানোর একটি বিকল্প পদ্ধতি। পাটের গুণগতমান সংরক্ষণের জন্য এই প্রযুক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিভিন্ন স্থানে নদ-নদী, পুকুর ইত্যাদির অভাব ও পরিষ্কার পানির অভাবে পাটের আঁশের মানগত অবস্থা অনেক সময় হ্রাস পায়। এ অবস্থায় বাংলাদেশের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট বহু পরীক্ষার পর বাঁশের হুকের সাহায্যে বা সিংগেল রোলার রিবনার বা ডাবল রোলার রিবনার এর সাহায্যে কাঁচা পাটের গাছ থেকে ছাল ছাড়ানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে। এ পদ্ধতিতে স্বল্প পানিতে অথবা পানির পাত্রে, যেমন- চাড়িতে পাট জাগ দেওয়ার মাধ্যমে পাটের উন্নত আঁশ সংগ্রহ করা যায়। রিবন রেটিং এ লোহার তৈরি হুক ব্যবহার করা হয়। হুকের সাথে ঘূর্ণায়মান রিং থাকে। ফলে ছাল টানার সময় দ্রুত ছাল সরে যায়। এ পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ালে আঁশের স্থিতিস্থাপকতা দৃঢ় থাকে, ফলে তার মূল্য বৃদ্ধি পায়। প্রাপ্ত পাটকাঠি মজবুত ও টেকসই হয়। আঁশে কাটিংস হয় না বলে উন্নত আঁশ পাওয়া যায়। অল্প জায়গায় বেশি পাট পচানো যায়। লোহার রিবনার বহু বছর ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতিতে ছাল ছাড়াতে বিঘা প্রতি তুলনামূলক শ্রমিক (৪-৫ জন) কম লাগে। সর্বোপরি অনেক কম সময়ে আঁশ ছাড়ানো যায় বলে এ পদ্ধতিতে চাষি দ্রুত লাভবান হতে পারে।
উল্লিখিত আলোচনা থেকে বলা যায়, পাটের আঁশের গুণগতমান সংরক্ষণে রিবন রেটিং পদ্ধতি ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম।