নানা বৈচিত্র্যে ভরা এ বিশ্ব। হাজার বৈচিত্র্যের মাঝেও মিল লক্ষ করা যায়। একজন মানুষের সাথে আর একজন মানুষের রয়েছে অসংখ্য পার্থক্য। তবু বিশ্বের হাজার হাজার সৃষ্টির মধ্যে মানুষকে চিনতে আমাদের কষ্ট হয় না। একইভাবে গরু, হাতি, ঘোড়া, আম, জাম, কলা, আকাশ, বাতাস, মাটি ইত্যাদিকেও চিনতে কষ্ট হয় না। শ্রেণিকরণ হলো এমন এক প্রক্রিয়া যার সহায়তায় আমরা সৃষ্টি রাজ্যের অগণিত বস্তু বা ঘটনার মধ্যে বিভিন্ন জাতি বা শ্রেণি সম্পর্কে সুশৃঙ্খল জ্ঞান লাভ করতে পারি।
উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ দুই প্রকার; যথা :
১ । প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ: যে শ্রেণিকরণে বস্তু বা বিষয়সমূহ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে বিন্যস্ত করা হয়, তাকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলে। যেমন: প্রাণিজগতে মেরদণ্ড থাকা ও না থাকার ভিত্তিতে প্রাণিকুলকে মেরুদন্ডী ও অমেরুদণ্ডী- এ দুই শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা যায়।
প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে বস্তুগুলোর শ্রেণিবিভাগ করা হয় তাদের সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান লাভ। এ শ্রেণিকরণকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলার কারণ হলো, যে মৌলিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে আমরা এ প্রকারের শ্রেণিকরণ করি সে মৌলিক সাদৃশ্যটি স্বয়ং প্রকৃতিই সরবরাহ করে। অর্থাৎ মৌলিক ও অপরিহার্য সাদৃশ্যগুলো প্রকৃতিতেই বিদ্যমান এবং সেগুলো আমাদের মনগড়া নয়।
২ । কৃত্রিম শ্রেণিকরণ: যে শ্রেণিকরণে বিশেষ কোনো ব্যবহারিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বস্তু বা বিষয়সমূহকে বিন্যস্ত করা হয় তাকে কৃত্রিম শ্রেণিকরণ বলে। যেমন: যখন মালী ফুলের গাছগুলো পরিচর্যার উদ্দেশ্যে বড় ও ছোট গাছ হিসেবে শ্রেণিকরণ করে তখন তা হয় কৃত্রিম শ্রেণিকরণ। এরকম শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য সাধন বা কোনো বিশেষ ব্যবহারিক উদ্দেশ্য সাধন। তাই একে ব্যবহারিক শ্রেণিকরণও বলে।