একজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী যখন বিভিন্ন গাছগাছড়ার রোগ নিরাময় ক্ষমতার ভিত্তিতে এগুলোর বিন্যাস করেন, সেটি হবে নিজস্ব বা ব্যবহারিক। কারণ এখানে গাছগাছড়ার মৌলিক সাদৃশ্য বাদ দিয়ে বিশেষ ব্যক্তির নিজস্ব প্রয়োজনে তারই ইচ্ছামতো বা মনগড়া সৃষ্ট কতকগুলো বাহ্যিক সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে করা হয়। কিন্তু গাছগাছড়াকে যখন ফুলের ভিত্তিতে সপুষ্পক ও অপুষ্পক ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয় তখন তা স্বাভাবিক বিন্যাস।
উদ্দীপকে বিধৃত বিষয়টি পাঠ্যক্রমের প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ ও কৃত্রিম শ্রেণিকরণের সাথে সাদৃশ্য রয়েছে। নিচে এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলো-
কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বস্তুসমূহ বা ঘটনাবলিকে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে একত্রে সন্নিবেশিত করার মানসিক প্রক্রিয়াকে শ্রেণিকরণ বলে। শ্রেণিকরণ দুই প্রকার; যথা: প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম শ্রেণিকরণ। যে শ্রেণিকরণে বস্তু বা বিষয়সমূহ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে বিন্যস্ত করা হয় তাকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলা হয়। যেমন: প্রাণিজগতে মেরুদণ্ড থাকা বা না থাকার ভিত্তিতে প্রাণিকুলকে মেরুদন্ডী ও অমেরুদণ্ডী এ দুই শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা যায়। এই শ্রেণিকরণকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলার কারণ হচ্ছে, যে মৌলিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে আমরা এ প্রকারের শ্রেণিকরণ করি সে মৌলিক ও অপরিহার্য সাদৃশ্যগুলো স্বয়ং প্রকৃতিতেই বিদ্যমান এবং সেগুলো আমাদের মনগড়া নয়।
অন্যদিকে শ্রেণিকরণে বিশেষ কোনো ব্যবহারিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বস্তু বা বিষয়সমূহকে বিন্যস্ত করা হলে তাকে কৃত্রিম শ্রেণিকরণ বলে। যেমন: যখন মালী ফুলের গাছগুলোর পরিচর্যার উদ্দেশ্য বড় ও ছোট গাছ হিসেবে শ্রেণিকরণ করে তখন তা হয় কৃত্রিম শ্রেণিকরণ। এ শ্রেণিকরণের মাধ্যমে কোনো বিশেষ ব্যবহারিক উদ্দেশ্য সাধিত হয় বলে একে ব্যবহারিক শ্রেণিকরণও বলা হয়।
মূলত প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণকে বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ ও কৃত্রিম শ্রেণিকরণকে অবৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণও বলা হয়ে থাকে।