তনিমার মা চাকরিজীবী। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে তিনি সবার জন্য রান্না করেন। সবার খাওয়ার পর তিনি থালাবাসন ধুয়ে রাখেন। ছুটির দিনগুলোতে তিনি ঘরের নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। তনিমা একদিন তার মাকে জিজ্ঞেস করে তুমি এত কাজ কীভাবে করো। তখন তার মা হেসে বলেন, আমরা যে খাবার খাই সেগুলোই আমাকে কাজ করতে সাহায্য করে।
মানুষ জীবন ধারণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য যা কিছু করে তাতেই শক্তির প্রয়োজন হয়। জীবনের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত রাসায়নিক শক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে অপরিসীম। জীবমাত্রই জীবন ধারণের জন্য খাদ্য প্রয়োজন। আর খাদ্যের অন্যতম কাজ শক্তি উৎপাদন করা। শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্যের অভাবে দেহের কোষ কলা নিজেই দগ্ধ হয়ে শক্তি উৎপাদন করে, ফলে দেহ ক্ষয় হয়ে রুগ্ন ও দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া সম্পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় থাকলেও দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গ, যেমন- বৃক্ক, ফুসফুস, হৃৎপিন্ডের, কার্যকারিতা অব্যাহত থাকে।
প্রধানত দুটি কারণে একজন পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তির শক্তির প্রয়োজন হয়।
১. দেহের অভ্যন্তরীণ কার্য নির্বাহের জন্য।
২. শারীরিক পরিশ্রম ও অন্যান্য কাজের জন্য। জীবন্ত কোষে যেসব জৈবিক প্রক্রিয়া অবিরত চলতে থাকে, তার জন্য শক্তির প্রয়োজন। জৈবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে শ্বসন, রক্ত সঞ্চালন, রেচন প্রভৃতি জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশক। প্রাণিদেহের চলাফেরা ও অন্যান্য পেশিগত কাজেও শক্তির প্রয়োজন। গর্ভকালে ভ্রুণের বৃদ্ধি ও সন্তানের পুষ্টি, দুগ্ধ তৈরি ও ক্ষরণের জন্য শক্তির প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। এসব শক্তি আমরা খাদ্য থেকে পাই।
পরিশেষে বলা যায়, প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য শক্তির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।