রায়হান আয়ারল্যান্ডের মেয়ে রেবেকাকে বিয়ে করে দেশে বেড়াতে এলো। এ দেশে এসে রেবেকা লক্ষ করলো, এখানকার মানুষ উৎসবপ্রিয় ও আন্তরিক। তারা বিভিন্ন ধর্মানুসারী হলেও 'যে যার মতো ধর্মানুষ্ঠান পালন করে। শুধু তাই নয়, সব ধর্মাবলম্বীরা একত্রিত হয়ে পহেলা বৈশাখ, একুশে ফেব্রুয়ারি ইত্যাদি দিবসও পালন করে।
উদ্দীপক দিয়ে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে নির্দেশ করা হয়েছে। আর বাংলাদেশের গ্রাম ও নগর সমাজের সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ব্যাপক ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
বাংলাদেশের গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষি পেশার সাথে জড়িত। কৃষিকে কেন্দ্র করেই গ্রাম-বাংলার জীবন ও সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। অন্যদিকে বাংলাদেশের শহরের মানুষ অকৃষিজ পেশার সাথে জড়িত। শহরের উৎপাদন ব্যবস্থায় শিল্পের গুরুত্ব বেশি, তাই শহরে শিল্পভিত্তিক জীবন ও সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজে পরিবার হচ্ছে যৌথ পরিবার। কিন্তু আধুনিক নগর জীবনের প্রভাবে যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের শহরগুলোতে একক পরিবারের সংখ্যাই বেশি। আবার বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে আত্মীয়তার সম্পর্ক অনেক মজবুত। কিন্তু শহরে জ্ঞাতি সম্পর্কের বন্ধন ঘনিষ্ঠ নয়। বাংলাদেশের শহরগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও গ্রামগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার তুলনামূলক কম।
এছাড়া গ্রামে ভূমিই হলো সামাজিক স্তরবিন্যাসের প্রধান উপাদান। তাই গ্রাম সমাজে সামাজিক স্তরবিন্যাসের মাত্রা কম পরিলক্ষিত হয়। অন্যদিকে শহর সমাজে সামাজিক স্তরবিন্যাসের উপাদানের সংখ্যা বেশি হওয়ায় স্তরবিন্যাসের মাত্রাও প্রকট। গ্রামের মানুষ অনাড়ম্বর, সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। কিন্তু শহরের মানুষ আড়ম্বরপূর্ণ, জাঁকজমকপূর্ণ, উন্নত এবং জটিল জীবনযাপনে অভ্যস্ত।
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহরের সংস্কৃতিতে ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।