শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন যুগ সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক তৌহিদ স্যার বলেন, একটি যুগের প্রধান আবিষ্কার ছিল পশুপালন ও কৃষিকাজ। নৃবিজ্ঞানী ভের গর্ডন চাইল্ড উক্ত যুগকে "নবোপলীয় বিপ্লব” বলে আখ্যায়িত করেছেন।
নব্যপ্রস্তর যুগের সাংস্কৃতিক বিকাশ, বিনিময় প্রথা ও ব্যবসা- বাণিজ্য সম্পর্কে আমার ধারণা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো- সাংস্কৃতিক বিকাশ যে কোনো সমাজ বা গোষ্ঠীর অন্যতম দিক। নব্যপ্রস্তর যুগও এর ব্যতিক্রম নয়। নবপ্রস্তর যুগে সাংস্কৃতিক বিকাশে উল্লেখযোগ্য সংযোজনের মধ্যে রয়েছে মৃৎশিল্প, বন্যপশুকে গৃহপালিত পশুতে রূপান্তরিত করা, কৃষিকাজে বিভিন্ন হাতিয়ারের ব্যবহার, বয়নশিল্প ও স্থাপত্যশিল্পের উদ্ভব, স্থায়ী বসতি নির্মাণ কৌশল, বাগিচা বা উদ্যান চাষাবাদ, বিনিময় ব্যবস্থা, অতি প্রাকৃত শক্তিকে বিশ্বাস, যাদুবিদ্যা, উদ্বৃত্ত ও সঞ্চয়, সম্পত্তি চেতনা ইত্যাদি।
নব্যপ্রস্তর যুগে একটা বা দুটো দ্রব্যের মধ্যে বিনিময় সীমাবদ্ধ ছিল। তখন যার যা প্রয়োজন সেজন্য বিনিময় ইচ্ছুক অন্য ব্যক্তি খুঁজে নেওয়া কঠিন ছিল না। কিন্তু কালক্রমে বিনিময় শুধু ফসল, লবণ বা মৃৎপাত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। উদ্বৃত্ত ফসল যত বেড়েছে, বিনিময়ের সামগ্রী তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এমতাবস্থায় নানা জাতীয় দ্রব্যাদি বিনিময়ে ইচ্ছুক ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির মধ্য থেকে পরস্পরের অভাব ও উদ্বৃত্ত যথাক্রমে পরস্পরের উদ্বৃত্ত ও অভাবের সাথে মিলে যায় এমন দুই ব্যক্তিকে সমন্বিত করা সম্ভবত দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। আর এ অসুবিধা দূর করার জন্যই বিনিময় মাধ্যম ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্ভব ঘটে।