অন্তরঙ্গ সমাজকল্যাণ পরিষদ এলাকার সরকারি কর্মচারীদের মাঝে একটি জরিপ পরিচালনা করে। সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে কতজন সৎ, কতজন দুর্নীতিপরায়ণ, কতজন সুখী আর কতজন অসুখী সেই বিষয়ে জরিপ পরিচালনা করে। তাদের জরিপের ফলাফল অনুযায়ী ঐ এলাকায় সরকারি কর্মচারীদের ৭৩% সৎ, ২৭% অসৎ, ৮০% সুখী আর ২০% অসুখী।
উদ্দীপকে উল্লিখিত অন্তরঙ্গ সমাজকল্যাণ পরিষদের কাজে যৌক্তিক বিভাগের বিভক্ত উপজাতি বা উপশ্রেণিগুলো পরস্পর বিচ্ছেদক হবে এই নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে। সেই নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য পরস্পরাঙ্গী বিভাগের অনুপপত্তি তৈরি হয়। নিচে পরস্পরাঙ্গী বিভাগ সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা হলো-
যৌক্তিক বিভাগের একটি অন্যতম ভ্রান্তরূপ হচ্ছে 'পরস্পরাঙ্গী বিভাগ', যার উদ্ভদ্ধ ঘটে বিভাগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়মের লঙ্ঘন থেকে। এই নিয়ম অনুযায়ী, যৌক্তিক বিভাগের ক্ষেত্রে বিভক্ত উপজাতি বা উপশ্রেণিগুলোকে পরস্পর বিচ্ছেদক হতে হবে। কিন্তু একটি জাতি বা শ্রেণিকে যদি একাধিক মূলসূত্রের ভিত্তিতে বিভক্ত করা হয়, তাহলে এর অন্তর্গত উপজাতি বা উপশ্রেণিগুলো পরস্পর স্বতন্ত্র বা বিচ্ছিন্ন না থেকে বরং একে অপরের সাথে মিশে যায়। আর এরূপ ক্ষেত্রেই উদ্ভব ঘটে আলোচ্য ত্রুটিপূর্ণ বিভাগের। বস্তুত এ ক্ষেত্রে বিভক্ত উপজাতি বা উপশ্রেণিগুলোর মধ্যে এমনভাবে মিশ্রণ ঘটে যে সেগুলোকে তাদের মূলসূত্র অনুযায়ী আর পৃথক করা যায় না। যেমন: 'মানুষ' শ্রেণিকে একই সাথে 'সততা' ও 'সুখ' মূলসূত্রের ভিত্তিতে বিভক্ত করা হলে এ থেকে প্রাপ্ত উপশ্রেণিগুলো বিচ্ছিন্ন না থেকে পরস্পরের অঙ্গীভূত হয়ে পড়ে। কারণ একই মানুষ সৎ হিসেবে সুখী হতে পারে আবার অসুখীও হতে পারে। একইভাবে মানুষ সুখী হিসেবে সৎ হতে পারে আবার অসৎও হতে পারে। আর এরূপ ক্ষেত্রে বিভাজন প্রক্রিয়াটি পরিণত হয় 'পরস্পরাঙ্গী বিভাগ' নামক ভ্রান্ত বিভাগে। কাজেই ভ্রান্তি এড়ানোর জন্য বিভাজন প্রক্রিয়াকে এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে, যাতে বিভাজ্য জাতি বা শ্রেণি থেকে প্রাপ্ত উপজাতি বা উপশ্রেণিগুলো সম্পূর্ণরূপে পরস্পর বিচ্ছিন্ন থাকে।