সুরভি মানুষকে বিভিন্ন গুণাবলিতে বিশ্লেষণ করে। সে সততায় বিভিন্ন মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করে- সৎ মানুষ ও অসৎ মানুষ। এগুলো সে তার পঠিত যুক্তিবিদ্যার বইয়ের জ্ঞানের আলোকে বিশ্লেষণ করে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত সুরভির বিষয়টি যুক্তিবিদ্যার যৌক্তিক বিভাগে আলোচনা করা হয়। নিচে যৌক্তিক বিভাগের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো-
এক: যৌক্তিক বিভাগে কেবল জাতিবাচক বা শ্রেণিবাচক পদের ক্ষেত্রেই বিভাজন প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা সম্ভব। একক কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর ক্ষেত্রে বিভাজন প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা যায় না। একমাত্র জাতি বা শ্রেণিকে তার অন্তর্গত উপজাতি বা উপশ্রেণিতে বিভক্ত করা সম্ভব। যেমন: 'শিক্ষা'র ভিত্তিতে মানুষ শ্রেণিকে 'শিক্ষিত' ও 'অশিক্ষিত' এ দুটি উপশ্রেণিতে বিন্যস্ত করাই হচ্ছে যৌক্তিক বিভাগ।
দুই: যৌক্তিক বিভাগ মূলত একটি মানসিক প্রক্রিয়া। জাগতিক বস্তুসমূহকে যখন বিভক্ত করা হয়, তখন সেগুলোকে সরাসরি বাস্তবিকভাবে বিভক্ত করা হয় না, বরং এগুলোকে বিভক্ত করা হয় ধারণার মাধ্যমে। যেমন: 'মানুষ' শ্রেণিকে যখন 'নারী' ও 'পুরুষ'- এ দুই শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হয় তখন তা করা হয় মনে মনে। কারণ বাস্তবে এরা পৃথকভাবে থাকে না। বরং একই সাথে অবস্থান করে। কাজেই এ অর্থে বিভাজন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে মানসিক।
তিন : যৌক্তিক বিভাগে কোনো একটি সূত্রের ভিত্তিতে জাতি বা শ্রেণিকে বিভক্ত করা হয়। সাধারণত কোনো জাতি বা শ্রেণিকে বিভক্ত করা হয় এমন একটি গুণের ভিত্তিতে, যে গুণটি ঐ জাতি বা শ্রেণির কেবল অংশবিশেষের মধ্যে বিদ্যমান থাকে। বিভাগের ক্ষেত্রে এ গুণটি যেসব বস্তুর মধ্যে থাকে সেগুলোকে এক ভাগে রাখা হয় এবং যেসব বস্তুর মধ্যে গুণটি থাকে না, সেগুলোকে অন্য ভাগে বিন্যস্ত করা হয়। আর এই গুণটিই হচ্ছে 'বিভাগের মূলসূত্র' (Fundamental division)'। যেমন: 'সততা' গুণটি কিছু মানুষের মধ্যে বিদ্যমান থাকলেও সব মানুষের মধ্যে নেই। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের মূলসূত্র হিসেবে 'সততা' গুণটির ভিত্তিতে মানুষ শ্রেণিকে 'সৎ মানুষ' ও 'অসৎ মানুষ'- এ দুটি উপশ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়।
উপর্যুক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ছাড়াও যৌক্তিক বিভাগের অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।