আনোয়ার কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্র। হৃদয় তার ছোটবেলায় বন্ধু। আনোয়ার কম্পিউটারের প্রকারভেদ সম্পর্কে বুঝতে গিয়ে বিভাগের এক বৈজ্ঞানিক ধারণা লাভ করল। হৃদয় তাকে বলল, বিভাগকরণ বিজ্ঞানসমূহের অন্যতম একটি মৌলিক সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো পদের ব্যক্তর্থের সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। পদ সম্পর্কিত আলোচনায় দেখা গেছে, এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে। একটি হলো এর জাত্যর্থ বা বৈশিষ্ট্যগত দিক এবং অন্যটি হলো এর ব্যক্তর্থ বা পরিমাণগত দিক। সংজ্ঞা আলোচনা করে পদের বৈশিষ্ট্যগত দিক, যা পদের অর্থ সুনির্দিষ্টভাবে ব্যক্ত করে। আর পরিমাণগত দিক থেকে পদের অর্থ সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার জন্যই বিভাজন বা যৌক্তিক বিভাগ সম্পর্কিত আলোচনার প্রয়োজন।
উদ্দীপকের আলোকে যৌক্তিক বিভাগের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা হলো-
কোনো একটি সূত্র বা নীতির ভিত্তিতে একটি জাতি বা উচ্চতর শ্রেণিকে তার অন্তর্গত উপজাতি বা নিম্নতর শ্রেণিসমূহে বিভক্ত করার প্রক্রিয়াকে যৌক্তিক বিভাগ বলে। সংজ্ঞা যেমন জাত্যর্থের বিশ্লেষণ, বিভাগ তেমনি ব্যক্তর্থের বিশ্লেষণ। যৌক্তিক বিভাগে সর্বদাই কোনো শ্রেণিকে তার উপশ্রেণিসমূহে বিভক্ত করা হয়। যৌক্তিক বিভাগ সব ক্ষেত্রেই একটি মূলসূত্র বা নীতিভিত্তিক। একটি শ্রেণিকে বিভক্ত করার সময় আমরা এমন একটি গুণ নির্বাচন করি, যা উক্ত শ্রেণির কিছু অংশের মধ্যে বর্তমান এবং বাকি অংশের মধ্যে নেই। যে নীতি বা গুণটির ভিত্তিতে বিভাগ করা হয়, তাকে বিভাগের মূলসূত্র বলে।
উদাহরণস্বরূপ, 'সভ্যতা'কে মূলসূত্র ধরে মানুষ শ্রেণিকে সভ্য ও অসভ্য এ দুটি উপশ্রেণিতে ভাগ করা যায়। আবার 'সামাজিকতা' গুণটির ভিত্তিতে মানুষ শ্রেণিকে আমরা সামাজিক ও অসামাজিক- এ দুটি উপশ্রেণিতে বিভক্ত করতে পারি। কাজেই দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন মূলসূত্রের ভিত্তিতে একই শ্রেণিকে বিভিন্নভাবে বা বিভিন্ন উপশ্রেণিতে বিভক্ত করা যেতে পারে। যৌক্তিক বিভাগে সবসময় একটি বড় শ্রেণিকে তার অন্তর্গত ছোট ছোট শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। কোনো শ্রেণিকে তার অন্তর্গত ব্যক্তিবিশেষের মধ্যে ভাগ করা হয় না।