'ক' কলেজের ছাত্রছাত্রীদেরকে মতিয়ুর স্যার একই সাথে ফলাফল এবং উপস্থিতির ভিত্তিতে বেশি মেধাবী এবং কম মেধাবী এবং কলেজিয়েট এবং নন-কলেজিয়েট-এ ভাগ করেন। অন্যদিকে, জসীম স্যার শুধু ফলাফলের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদেরকে মেধাবী এবং কম মেধাবী হিসেবে ভাগ করেন।
উদ্দীপকে মতিয়ুর স্যারের বিভাগ হলো সংকর বিভাগ এবং জসীম স্যারের বিভাগ হলো অব্যাপক বিভাগ। নিচে এই দুই বিভাগের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো-
সংকর শব্দের অর্থ মিশ্রণ। যৌক্তিক বিভাগের ক্ষেত্রে যখন একই সময়ে একটি মাত্র মূলসূত্র গ্রহণ না করে, একাধিক মূলসূত্রের মিশ্রণে বিভাগ করা হয়, তখন বিভাগটি ভ্রান্ত হবে। এরূপ বিভাগের নাম সংকর বিভাগ। যেমন- মানুষকে সভ্যতা ও সততার ভিত্তিতে ভাগ করা। এ বিভাগে একটির পরিবর্তে দুটি মূলনীতি গ্রহণ করা হয়েছে। 'মানুষ' শ্রেণিকে দুটি মূলসূত্রের ভিত্তিতে বিভক্ত করার ফলে যেসব উপশ্রেণি পাওয়া যায় সেগুলো হলো- সভ্য মানুষ ও অসভ্য মানুষ, সৎ মানুষ ও অসৎ মানুষ। এক্ষেত্রে যে সভ্য সে যেমন সৎ হতে পারে, তেমনি অসৎও হতে পারে, যে অসভ্য সে যেমন সৎ হতে পারে, তেমনি অসৎও হতে পারে। আবার যে সৎ সে যেমন সভ্য হতে পারে, তেমনি অসভ্যও হতে পারে; যে অসৎ সে যেমন সভ্য হতে পারে তেমনি অসভ্যও হতে পারে। এক্ষেত্রে উপজাতিসমূহ পরস্পর পরস্পরের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় অবস্থান করছে। ফলে সংকর বিভাগ নামক অনুপপত্তি ঘটেছে।
অপরদিকে, যৌক্তিক বিভাগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে একটা জাতিকে তার অন্তর্গত উপজাতিসমূহে বিভক্ত করা। তবে বিভাজ্য জাতির ব্যক্ত্যর্থের চেয়ে বিভক্ত উপজাতির ব্যক্ত্যর্থ কম বা বেশি হলে চলবে না। কিন্তু যদি কোনো জাতিকে বিভক্ত করার সময় অজ্ঞানবশত বিভাজ্য জাতির অন্তর্ভুক্ত কোনো উপজাতিকে বাদ দেওয়া হয় তাহলে উপজাতিগুলোর ব্যক্ত্যর্থ জাতির ব্যক্ত্যর্থের তুলনায় কম হয়। ফলে অব্যাপক বিভাগজনিত অনুপপত্তি ঘটে। যেমন- ভাষার ভিত্তিতে মানুষকে বাঙালি ও ইংরেজ- এ দুটো উপজাতিতে ভাগ করা যায়। মানুষকে উল্লিখিত দুটি উপজাতিতে বিভক্ত করা হলে বিভক্ত উপজাতিগুলোর ব্যক্ত্যর্থ মূল জাতির ব্যক্ত্যর্থের তুলনায় কম হবে। কেননা আরবি ভাষা, সংস্কৃত ভাষা প্রভৃতি উপজাতির মানুষ বাদ দিয়ে এ বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে অব্যাপক বিভাগ নামক অনুপপত্তি ঘটেছে।