পৃথিবীতে কোনো কিছুই অর্জন করা সহজ নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কিউবা, যুগোস্লাভিয়া, পোল্যান্ড, চেকোস্লোভাকিয়া ও পূর্ব জার্মানি নৈতিক সমর্থন প্রদান করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গণচীন এর বিরোধিতা করে। ফলে বাংলাদেশের বিজয় দেরিতে আসে
বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গণচীনের বিরোধিতার বেশকিছু কারণ রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকার সরকারি নীতি ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। প্রথম দিকে অস্ত্র এবং সমর্থন দিয়ে মার্কিন সরকার পাকিস্তানকে সহায়তা করে। তবে নিজ দেশে বিরোধী দলের চাপে মার্কিন সরকার ভারতে অবস্থানরত বাঙালি শরণার্থীদেরও আর্থিক সহায়তা করেছিল। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সঙ্কো ভারতের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রচণ্ড ভারত বিরোধী ও পাকিস্তান ঘেঁষা নীতি অনুসরণ করতে থাকে। স্বভাবতই তাদের এ ভূমিকা বাংলাদেশের বিপক্ষে যায়। তবে মার্কিন আইনসভা, কংগ্রেস ও সিনেটের অনেক সদস্য, বিভিন্ন সংবাদপত্র, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদসহ প্রায় সর্বস্তরের জনগণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভূমিকা পালন করে।
গণচীন: গণচীন ছিল ভারত বিরোধী পাকিস্তানের বন্ধুরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে দেখা যায় চীন দখলদার, একনায়ক, স্বৈরাচার ও আগ্রাসী পাকিস্তানি প্রেসিডেন্টকে নিরঙ্কুশ সমর্থ দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার প্রতিটি কার্যক্রমে চীন অন্ধের মতো সমর্থন দিয়েছে। চীন পাকিস্তানকে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করেছিল এবং লাখ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ জাতিসংঘে সদস্যপদের আবেদন করলে চীন সেখানেও বিরোধিতা করেছিল।
তাই বলা যায়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন প্রশাসন বিপক্ষে অবস্থান করেছিল।