বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা যুদ্ধবিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশের কার্যক্রম পরিচালনা করে। তেমনি একটি সংস্থা 'অ'। 'অ' প্রতিষ্ঠানটির ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের বাইরে নিজস্ব কোনো উদ্যোগ বা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা অতি সীমিত।
উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ জাতিসংঘের রাজনৈতিক উদ্যোগ বাংলাদেশের স্বার্থে নয়, ভোটো ক্ষমতাধারী রাষ্ট্রগুলোরই স্বার্থসংশ্লিষ্ট ছিল।
বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘে গণহত্যা নিবৃত্তি ও শান্তিবিষয়ক সনদ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে যে গণহত্যা সংঘটিত করে সে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ও মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জাতিসংঘ বৃহৎ শক্তিসমূহের রাবার স্ট্যাম্প হিসেবেই কাজ করেছে। জাতিসংঘ সনদ এমনভাবে প্রণীত হয়েছে যে 'ভেটো' ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের পারস্পরিক সমঝোতা ব্যতীত কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিলে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের ক্ষেত্রেও নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মুসলিম দেশগুলো পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার প্রশ্নে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। জাতিসংঘ 'রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার যুক্তির প্রশ্নে' বিজয় অর্জনের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে পারেনি।
উদ্দীপকে 'অ' সংস্থার কথা বলা হয়েছে, যেটি ভেটো ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো দ্বারা নির্ধারিত। যা জাতিসংঘের ইঙ্গিতবহ।
উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জাতিসংঘের রাজনৈতিক কার্যক্রম ভেটো ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ছিল।