মিতার বয়স যখন তেরো কি চৌদ্দ বছর তখন সে তার এক ম্যাডামের চাল-চলনে, কথা-বার্তায়, সাজ-সাজ্জায় মুগ্ধ হয়ে যায়। মনের অজান্তে নিজে ম্যাডামের মতো হওয়ার চেষ্টা করে। ম্যাডামের এই নান্দনিকতাবোধের কারণেই মিতাও একজন স্কুল শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রকাশিত করতে সক্ষম হলো। অন্যদিকে নীতা ছিল খুবই সাহসী ও মেধাবী। ক্লাসের সবাই তাকে সমীহ করলেও সে খুব কমই অন্যকে পাত্তা দেয়। কিন্তু কিছুদিন লক্ষ্য করে দেখলাম সুন্দর, গুছিয়ে, সাবলীলভাবে কথা-বলাকে সে খুবই গুরুত্ব প্রদান করে। এছাড়া সে নিজেই কথা-বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ মত প্রদানে, সঠিক যুক্তি প্রদানে অত্যন্ত পারদর্শী।
উদ্দীপকে মিতা ও নীতার সে বিষয়টি সাদৃশ্য রয়েছে তা হলো নন্দনতত্ত্বের বিষয়।
নন্দনতত্ত্ব হলো একটি কলা সম্পর্কীয় বিজ্ঞান। এটির মধ্যে রয়েছে নান্দনিক আকর্ষণীয় দিক। এর দ্বারা মানুষের অনুভূতি জাগ্রত ও উদ্দীপ্ত হয়। মূলত সে কারণে সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ কলাকে ভালোবাসে। চলনে-বলনে, আচার-ব্যবহারে, রুচিতে, সাজ-সজ্জায়, বেশ-ভূষায় নান্দনিকতা ফুটে ওঠে। এটিকে আবার অন্য কেউ অনুকরণ করে। উদ্দীপকে ম্যাডামের নান্দনিকতার দিকটি মিতার ভালো লাগে, সে কারণে সে তা অনুকরণ করে। ম্যাডামের কথা বলা, সাজ-সজ্জাতে সে মুগ্ধ হয়। অন্যদিকে নীতি ছিল সাহসী ও মেধাবী। সে নিজস্ব একটি ব্যক্তিত্ব তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলো; যার কারণে সবাই তাকে সমীহ করতো। কথা বলার সময় সে সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলতো। সাবলীলভাবে কথা বলাকে সে খুব গুরুত্ব দিতো। সে নিজে যেমন কথা বার্তায় তথা বাচন ভঙ্গিতে গুরুত্ব দিতো তেমনি সে যুক্তি প্রদানে পারদর্শী ছিলো। মিতা ও নীতার যে বিষয়টি সাদৃশ্য ছিল তাহলো বাচন-ভঙ্গির সৌন্দর্য্যের দিকটি। মিতা যেমন ম্যাডামকে অনুকরণ করে তথা ম্যাডামের চাল-চলন, কথা-বার্তাকে অনুকরণ করে এবং পরবর্তীতে নিজেকে শিক্ষক হিসাবে প্রকাশ করতে সক্ষম হয়। তেমনি নীতা সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলে, সাবলীল কথা-বার্তায় গুরুত্ব দেয় এবং সুন্দর বাচন-ভঙ্গি ও যুক্তি প্রদানে পারদর্শীতা লাভ করে। যার কারণে সবাই তাকে সমীহ করতো।
অতএব মিতা ও নীতার মধ্যে সবচেয়ে যে বিষয়টি সাদৃশ্য তা হলো বাচন-ভঙ্গি, সুন্দর ও সাবলীলভাবে কথা বলা।