রিপন খুব আগ্রহ নিয়ে যুক্তিবিদ্যা ক্লাস করে। ক্লাসের প্রথম দিনে স্যারের কথা তার বার বার মনে পড়ে। সেদিন স্যার বলেছিল যুক্তিবিদ্যা হলো দর্শনের একটি অংশ। দর্শন হলো এমন এক উপলব্ধি ও জ্ঞানগর্ভ যা সামগ্রিকভাবে সার্বিক সত্যকে জানতে চায় এবং সেই সত্য অন্য সবাইকে জানাতে চেষ্টা করে।
উদ্দীপকের শিক্ষকের ভাষ্য অনুযায়ী দর্শন সার্বিক সত্যকে জানতে এবং জানতে চায়। উক্তিটির সাথে দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই। ব্যুৎপত্তিগতভাবে আমরা দেখতে পাই দর্শন শব্দটি দৃশ ধাতু থেকে এসেছে। যার অর্থ সামগ্রিকভাবে দেখা বা অনুধাবন করা। আর ইংরজি Philosophy শব্দটি গ্রিক শব্দ Philos এবং Sophia থেকে এসেছে। যার অর্থ জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ বা ভালোবাসা। এখানে জ্ঞান বলতে কোনো আংশিক জ্ঞান নয়, এই জ্ঞান হবে সামগ্রিক জ্ঞান।
দর্শন জগৎ ও জীবন সম্পর্কে সূক্ষ্ম বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করে। বস্তুত দর্শন আমাদের জীবনের অর্থ, স্বরূপ, পরিণতি ও মূল্য নির্ধারণ করে। জীবন ও জগৎকে সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল করার ক্ষেত্রে দর্শনের ভূমিকা অনন্য। কারণ দর্শন-জীবন ও জগতের এমন কোনো বিষয় নেই যে আলোচনা করে না। সমগ্র বিষয়াদি নিয়ে দর্শন আলোচনা করে থাকে। দর্শন সামগ্রিক সত্যকে জানতে চায়। খন্ড খন্ড বা আংশিক সত্য দিয়ে দর্শনের কৌশল পরিতৃপ্ত হয় না। এজন্য দর্শন অখণ্ড স্ত্য হিসাবে পরমসত্তাকে জানতে চায়। অর্থাৎ দর্শন হলো এমন এক উপলব্ধি ও জ্ঞানগর্ভ যা সামগ্রিকভাবে সার্বিক সত্যকে জানতে চায় এবং সেই সত্য অন্য সবাইকে জানাতে চায়।
সুতরাং আমরা দেখতে পাই যে, দর্শন জীবন ও জগতের সার্বিক রূপকে জানতে চায়। জীবন ও জগতের এমন কোনো দিক নেই যা দর্শনের আলোচনার বিষয়বস্তু নয়। সকল কিছুর সত্য জানতে চায় দর্শন। তাই উদ্দীপকের শিক্ষকের সাথে একমত পোষণ করে আমরা এ কথা বলতে পারি যে, দর্শন সার্বিক সত্যকে জানতে এবং জানাতে চায়।