শহিদদের ক্লাসে যুক্তিবিদ্যার শিক্ষক জনাব মমতাজ নীতিবিদ্যা সম্পর্কে পড়াতে গিয়ে বললেন যে, দর্শনের দুটি শাখা হিসেবে নীতিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যা উভয়েই আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান। তাই উভয়ের মাঝে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। তিনি আরও বললেন, ব্যবসায় নীতিবিদ্যা ও পেশাগত নীতিবিদ্যার সকল ক্ষেত্রে যুক্তিবিদ্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ব্যবসায় নীতিবিদ্যা ও পেশাগত নীতিবিদ্যার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তিবিদ্যায় যুক্তিকৌশল ও যুক্তিপ্রক্রিয়া প্রয়োগ করা যায়। যুক্তিবিদ্যা ব্যবসায় নীতিবিদ্যা ও পেশাগত নীতিবিদ্যার সকল ক্ষেত্রেই অন্যন্য ভূমিকা রাখে। ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নৈতিক নিয়মাবলি প্রয়োগের পাশাপাশি পরিবেশ ও সমাজের কল্যাণের ও অকল্যাণের বিষয়ও যৌক্তিক দিক থেকে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও মালিক শ্রেণির স্বার্থ ও কল্যাণের পাশাপাশি ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শেয়ার হোল্ডার, কর্মকর্তা-কর্মচারী, এজেন্ট- পরিবেশক, ক্রেতা ও জনগণের স্বার্থের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয়। ব্যবসায় | গোপনীয়তা, ব্যবসায় স্বার্থের দ্বন্দ্ব, পরিবেশক ও সাপ্লাইকারীদের স্বার্থ, ব্যবসার ক্ষেত্রে উপহার দেওয়া ও গ্রহণ করার কোনো নৈতিক ভিত্তি আছে কি-নেই, বিজ্ঞাপনে নৈতিক ভিত্তি কী হওয়া উচিত, ব্যবসায় মুনাফা বৃদ্ধির কৌশল কী হওয়া উচিত প্রভৃতি ক্ষেত্রে নৈতিক যুক্তির ব্যবহারিক প্রয়োগে ভূমিকা রাখে। প্রকৃত প্রস্তাবে, যুক্তি বা চিন্তা বাস্তবতা বিবর্জিত কোনো বিষয় নয়। বাস্তবতা ও পরিস্থির সাথে মিল ও সামঞ্জস্য রেখে ব্যবসায় নীতিবিদ্যায় যুক্তি বা চিন্তার প্রয়োগ দেখানো হয়। অন্যদিকে, পেশাগত নীতিবিদ্যায়ও যুক্তি বা নৈতিক চিন্তার ভূমিকা অপরিসীম। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য পেশাগত নীতিবিদ্যায় মৌলিক দিক। কোনো ব্যক্তি যে প্রতিষ্ঠান বা পেশাতেই নিয়োজিত থাক না কেন তার একটি নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ রয়েছে। প্রতিষ্ঠান যদি সে ব্যক্তির পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য মঙ্গলসূচক কোনো কর্মকান্ড করে, তাহলে ঐ ব্যক্তির জন্য শর্তহীনভাবে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কর্তব্য পালন করার বাধ্যবাধকতা এসে দাঁড়ায়। কাজেই • ব্যক্তি তখন কর্তব্য দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে কর্তব্য সম্পাদন করে।