শিক্ষক মহোদয় যুক্তিবিদ্যার ক্লাস নিচ্ছেন। একপর্যায়ে কমল প্রশ্ন করল, "স্যার, দর্শনের পরিধি যদি যুক্তিবিদ্যার চেয়ে ব্যাপকই হয় তো আমরা যুক্তিবিদ্যা না পড়ে দর্শন পড়লেই পারতাম।" শিক্ষক মহোদয় বললেন, "দর্শনের পরিধি নিঃসন্দেহে বিশাল কিন্তু কমল, তোমার যুক্তিটা এরকম যে আমরা শাকসবজি না খেয়ে ভিটামিন ক্যাপসুল খেলেই পারতাম।"
উদ্দীপকে শিক্ষক মহোদয়ের বক্তব্যটি হলো- "দর্শনের পরিধি নিঃসন্দেহে বিশাল কিন্তু কমল, তোমার যুক্তিটা এরকম যে, আমরা শাকসবজি না খেয়ে ভিটামিন ক্যাপসুল খেলেই পারতাম।" এর দ্বারা শিক্ষক দর্শনের পাঠের ক্ষেত্রে যুক্তিবিদ্যার গুরুত্বকে বোঝাতে চেয়েছেন। কারণ, যুক্তিবিদ্যা হচ্ছে দর্শনের প্রধান অঙ্গ। দর্শনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো যুক্তি। এই যুক্তি দ্বারা দর্শনের আলোচনা পরিপূর্ণতা লাভ করে। আর যুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হয় যুক্তিবিদ্যায়। যুক্তিবিদ্যার আলোচনা হলো সত্যতা নিয়ে। দর্শন এ সত্যতার পাশাপাশি সুন্দরকে নিয়েও আলোচনা করে। সৌন্দর্যবোধ যুক্তি নিরীক্ষণের বিষয় নয় বরং দর্শনের বিষয়। বিজ্ঞান, সাহিত্য বা অন্য যেকোনো শিল্প মাধ্যমে যেকোনো সৃষ্টি কার্যের বিচার বিশ্লেষণ যুক্তিবিদ্যায় হয় না। এটি দর্শনে সম্পন্ন হয়। দর্শন ও যুক্তিবিদ্যার মধ্যে কিছুটা বৈসাদৃশ্য থাকলেও যুক্তিবিদ্যা দর্শনের প্রধান অঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। যুক্তিবিদ্যার নিরূপিত সত্যের সাথে বাস্তবতার সম্পৃক্ততা নির্ধারণ করা দার্শনিক আলোচনার অন্যতম লক্ষ। অধিবিদ্যা, জ্ঞানতত্ত্ব বা মূলবিদ্যা; এদের আলোচ্যসূচি যাই হোক যুক্তির কষ্টিপাথরে যথার্থ স্বরূপ যাচাই করতে হয়। প্রত্যেকজন দার্শনিক তাদের মতবাদের পিছনে প্রতিষ্ঠা করেছেন এক বা একাধিক যুক্তি। তাই যুক্তি ছাড়া বা যুক্তিবিদ্যা ছাড়া দর্শন অধ্যয়ন করা আর শাকসবজি না খেয়ে ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়া সমান। এজন্য উদ্দীপকের শিক্ষক মহোদয়ের উক্তিটি যথার্থ হয়েছে।