দৃশ্যকল্প-১: ১৩/১৪ বছর বয়সি ইরাম তার শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তন বুঝতে পারে, যা দ্রুত দু-এক বছরের মধ্য সম্পন্ন হয়। দৃশ্যকল্প-২
দৃশ্যকল্প-২ এর 'A' ও 'B' চিহ্নিত স্থানে যথাক্রমে বয়:সন্ধিকালে সমবয়সী দল ও পারিবারিক প্রভাবের চিত্র ফুটে উঠেছে যার মধ্যে পরিবারের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
বয়:সন্ধিকালকে বলা হয় সংকটকাল। এই সংকটকালে ছেলেমেয়েদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে মা-বাবা। তারা সন্তানদের রক্ষণাবেক্ষণ ও সমর্থন করে, সন্তানদের প্রতি আবেগ প্রবণ হয় এবং সন্তানকে সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের শিক্ষাদান করেন। এ সকল দায়িত্বপালন করা ছাড়াও মা সন্তানকে ভালোবাসেন এবং সে জন্য তাকে তার ইতিবাচক অনুভূতিগুলোকে প্রকাশ করেন। পরিবারেই শিশু শিক্ষার হাতেখড়ি লাভকরে এবং সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে এ শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বয়ঃসন্ধিকালে অনেক ছেলেমেয়ে হঠাৎ শারীরিক পরিবর্তনের সাথে খাপ-খাওয়াতে গিয়ে লজ্জায় পড়ে এবং বুঝে উঠতে পারে না তার কি করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বাবা-মা তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকে। বলতে গেলে পারিবারিক সহযোগিতা ছাড়া বয়ঃসন্ধিকালে কোনো ছেলে-মেয়ের পক্ষে এই সংকটকাল উত্তোরণ করা সম্ভব নয়।
প্রদত্ত চিত্রের 'A' চিহ্নিত স্থানে বয়ঃসন্ধিকালে সমবয়সী দলের প্রভাব তথা সাংস্কৃতিক প্রভাবকে দেখানো হয়েছে। বয়:সন্ধিকালে সমবয়সী দল একটি শক্তিশালী দল যাদের মর্যাদা সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের ওপর নির্ভরশীল।
বয়:সন্ধিকালে বিভিন্ন শ্রেণির ছেলে ও মেয়ের আত্ম আদর্শ যেহেতু আলাদা হয় সেজন্য তাদের সামাজিক মর্যাদা ও জনপ্রিয়তাও শ্রেণিভেদে তারতম্য হয়। বয়:সন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের মাঝে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মেতে ওঠার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। বয়ঃসন্ধিকালে শিশুর মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রেও সমবয়সী দল প্রভাব বিস্তার করে থাকে। সহযোগিতা, সহমর্মিতা, নেতৃত্ব, পরমতসহিষ্ণুতা ও পরোপকারীতার মতো নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষাগুলো পরিবারে শুরু হলেও তা সমবয়সীদের মাধ্যমে চর্চার সুযোগ হয়। তাই দেখা যায়, পরিবার ও সমবয়সী দল উভয়ই বয়ঃসন্ধিকালে শিশুর ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করলেও এক্ষেত্রে পরিবারের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, প্রদত্ত দৃশ্যকল্প-২ এর 'A' ও 'B' চিত্র দুটির মধ্যে বয়:সন্ধিকালে 'B' চিত্রের তথা পরিবারে প্রভাব শিশুর ওপর সবচেয়ে বেশি হয়।