রেবা, জেবা ও জয় তিন ভাইবোন। রেবা বয়ঃসন্ধিকাল প্রয় তিন বছর আগে পার করেছে। জেবার বয়স ১৩ এবং তাদের একমাত্র ভাই জয়ের বয়স ১৫। রেবা খেয়াল করলো, জেবা প্রায়ই মন খারাপ করে এক বসে থাকে, সময়মত খেতে চায় না, সব সময় বিষন্ন থাকে। রেবা যেট বোনের সমস্যা বুঝতে পেরে তার সব কথা শুনে এবং পরামর্শ দেয় অন্যদিকে জয়ের কণ্ঠস্বর হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় সে বোনদের সামান কথা বলতে লজ্জা পায়
জেবা ও জয়ের আচরণ পরিবর্তনের কারণ এক হলেও বৈশিষ্টোর দিক থেকে ভিন্ন"- উক্তিটি যথার্থ।
বয়ঃসন্ধিকাল সময়টি ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে আসলেও তাদের বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন হয় ভিন্ন ধরনের। বয়াসন্ধিকালে মেয়েদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয় সন্তান উৎপাদনকারী ব্যবস্থা ও অন্যান্য যৌন | অঙ্গের। মেয়েদের এ সময়ে ডিম্বকোষের বৃদ্ধি হয়। এ ডিম্বকোষে সন্তান উৎপাদনকারী ডিম্ব তৈরি হয়। মাধ্যমিক বা গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে আছে স্তন, গুপ্তলোম ও পেলভিসের ক্রমবর্ধমান প্রস্থ ও গভীরতা। পুরুষের মধ্যে সন্তান উৎপাদনকারী অঙ্গসমূহের মধ্যে আছে অন্ডকোষ (যা শুক্রাণু তৈরি করে), পুংলিঙ্গ (যা দিয়ে শুক্রাণু বের হয়) এবং অন্যান্য আন্তসংযোগকারী অঙ্গসমূহ ও নালি। এরা শুক্রাণু সংগ্রহ করে এর মধ্যে তরল পদার্থের সংযোজন করে এবং অন্ডকোষ থেকে তা পুংলিঙ্গে বহন করে নিয়ে আসে। গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে গুপ্তলোমের আবির্ভাব, মুখ ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গে লোমের উপস্থিতি ও কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন। গুপ্তলোমের আবির্ভাবের এক বৎসরের মধ্যে প্রথম বীর্যপাত দেখা দেয়।
মেয়েদের মধ্যে ১০/১১ বৎসর বয়সে প্রথম স্তন উঠতে আরম্ভ করে। এটাকে প্রজনন ব্যবস্থা পরিবর্তনের একটা বহিঃপ্রকাশ বলে ধরে নেয়া হয়। প্রথম ঋতুর ২ বৎসর আগে স্তনের বৃদ্ধি হয়। মেয়েরা কোন বয়সে ঋতুবতী হয় তা সঠিকভাবে বলা যায় না। তবে মেয়েদের ঋতু শুরু হয় ১২/১৩ বছর বয়সে। ঋতুর বয়স ১১ থেকে ১৫ বৎসরের মধ্যে হলে ভাল হয়। অনেকে এর আগেও ঋতুবতী হতে পারে।
উদ্দীপকে, জেবার খাবারের প্রতি অনীহা, বিষণ্ণ থাকা এবং জয়ের কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হওয়া ছেলে ও মেয়েভেদে ভিন্ন ভিন্ন বয়ঃসন্ধিকালীন বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে।
সুতরাং, উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, ছেলে ও মেয়ে ভেদে বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যগুলো ভিন্নরকম হয়।