সাইফুল সাধারণ কৃষক পরিবারের সদস্য। বাবা-মা, ভাই- বোন মিলে ৬ জনের পরিবার। সাইফুলের বাবা বসতবাড়ির পাশের জমিতে ধান চাষের পাশাপাশি শাক-সবজি, পিঁয়াজ, আদা-রসুন ইত্যাদি চাষ করে। জমির পশ্চিম-উত্তর কোণায় ডোবাতে মাছের চাষ করে। ডোবার উপর মাচায় হাঁস-মুরগি পালন করে। সাইফুলরা বাড়িতে ২টি গরু পালন করে। গরু দিয়ে জমি চাষ করে এবং গরুর গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা সার হিসাবে ব্যবহার করে। খামারে উৎপাদিত দ্রব্য ব্যবহার করে সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পণ্য বাজারজাত করে কিছু অর্থের সংস্থানও হচ্ছে।
সাইফুল ও তার পরিবার সমন্বিত বা মিশ্র খামার পরিচালনা করছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বাংলাদেশ একটি গ্রাম প্রধান দেশ। এদেশের ৮০-৮৫% লোক গ্রামে বাস করে, যার অধিকাংশই অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল এবং সীমিত জমির মালিক। উক্ত পরিবারসমূহের অনেকেই নিজের সীমিত জমিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী ধান, গম, ডাল, সরিষা, শাক-সবজি, আলুসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন করে। বাড়িতে ঘরের চারদিকে আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে, ইত্যাদি চাষ করে নিজের চাহিদা পূরণ করে এবং কিছু বিক্রি করে পরিবারের নগদ অর্থের সংস্থান করে। গ্রামের অধিকাংশ লোক বাজার থেকে হাঁস-মুরগি, দুধ বা মাছ ক্রয় করে না। তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজের স্বল্প পরিসর সমৃদ্ধ খামারপণ্য ব্যবহার করছে এবং কিছু বাজারজাত করছে। অর্থাৎ আমাদের দেশের বহুলোক সাইফুল ও তার পরিবারের মতো কৃষিপণ্য উৎপাদন করে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনয়ন করছে তথা কৃষি অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে। তাই বলা যায়, বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিতে সমন্বিত বা মিশ্র খামারের অবদান অপরিসীম।