হাফিজ সাহেব ২০ একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করেন। কিন্তু জমি চাষ, ফসল কাটা ও মাড়াইয়ের সময় তাকে হিমশিম খেতে হয়। তাই তিনি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের স্থানীয় একটি শাখা থেকে দুই লাখ টাকা কৃষিঋণ নিয়ে একটি পাওয়ার টিলার, একটি ফসল কাটার ও একটি ফসল মাড়াই যন্ত্র কিনেন।
হাফিজ সাহেব রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক তথা প্রাতিষ্ঠানিক উৎস থেকে ঋণ নিয়েছেন। বাংলাদেশে কৃষি ঋণের উৎসগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক এ দুই উৎসে ভাগ করা যায়। সে হিসেবে হাফিজ সাহেব আরও যেসকল উৎস থেকে ঋণ নিতে পারতেন তা নিচে আলোচনা করা হলো-
হাফিজ সাহেব প্রাতিষ্ঠানিক উৎসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, গ্রামীণ ব্যাংক অথবা অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেও এই ঋণ নিতে পারতেন। অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎসের তালিকায় রয়েছে বন্ধু-বান্ধব, গ্রাম্য ব্যবসায়ী, গ্রাম্য মহাজন, গ্রামের ধনী কৃষক ইত্যাদি। প্রাতিষ্ঠানিক উৎসের থেকে নেয়া ঋণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্তাবলি পূরণ করতে হয়। এ ঋণ প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী ক্ষেত্র বিবেচনা করে দেওয়া হয়। যেমন- গ্রামীণ ব্যাংক ছোট ব্যবসা করার জন্যে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে। সমবায় ব্যাংক ঋণ দেয় কৃষি সমবায়ের ভিত্তিতে কোনো কাজ করতে। এই ঋণ নিতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সম্ভাবনা অনেক বেশি, ফলে ঋণ পেতে অনেক সময় দেরি হয়। অনেক সময় দালাল দ্বারা প্রতারিতও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণের উৎসগুলো থেকে ঋণ পাওয়া কিছুটা সহজ। এ ঋণ যখন তখন বিশেষ কোনো শর্ত বা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই নেয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই কিছু না কিছু বন্ধক রাখতে হয়। এ ঋণে সাধারণত চড়া সুদ দিতে হয়। অনেক সময় মহাজনেরা প্রতারণাও করে থাকে।
সুতরাং বলা যায়, হাফিজ সাহেব উল্লিখিত উৎসগুলো থেকে ঋণ নিতে পারতেন। তবে বিভিন্ন দিক বিবেচনায় প্রাতিষ্ঠানিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়াই বেশি সুবিধাজনক।