করিম উপকূলীয় এলাকার একজন মৎস্য চাষি। অধিক লাভবান হওয়ার আশায় তিনি বাংলাদেশের 'সাদা সোনা' নামে পরিচিত মাছের চাষ করেন। কিন্তু মাছ পচনশীল হওয়ায় সঠিক সময়ে ভালো মানের মাছ বিক্রি করা তার জন্য দূরহ ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় তার বন্ধু শরীফ তাকে কৃষি সমবায়ের সদস্য হতে বলেন।
কৃষি কর্মকর্তা কর্তৃক বর্ণিত সংগঠনটি হলো কৃষি সমবায়, করিম কৃষি সমবায়ের সদস্য হবে যার মাধ্যমে কৃষিপণ্যের সঠিক বাজারজাতকরণ সম্ভব। উৎপাদিত কৃষিপণ্য কৃষকের নিকট থেকে ভোক্তার নিকট পৌঁছে দেওয়াই হচ্ছে কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ। সমবায় গঠন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বারজাতকরণের মাধ্যমে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।
সমবায় বিভিন্ন দিক থেকে কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। সমবায় তার সদস্যদের মধ্যে কৃষিপণ্য বিপণনে ঐক্য ও সচেতনতাবোধ সৃষ্টি করে। সমবায়ের মাধ্যমে পণ্য গুদামজাত করে অনুৎপাদন মৌসুমে ও দালালদের এড়িয়ে সরাসরি ভোক্তাদের নিকট বিক্রয় করা যায়, ফলে কৃষকদের উচ্চ মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। তাছাড়া কৃষিপণ্য পরিবহন, প্যাকেজিং, গুদামজাতকরণ ইত্যাদি কাজ যৌথভাবে করার কারণে বাজারজাতকরণ ব্যয় হ্রাস পায়। সমবায়ের মাধ্যমে পণ্য বাজারজাত করা হলে ওজনে কারচুপি, খাজনা ইত্যাদি থেকে কৃষক রক্ষা পায়। বাজারে পণ্যের চাহিদা, বাজারদর, ভবিষ্যৎ চাহিদা ইত্যাদি বাজার সংক্রান্ত তথ্য সহজে সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকদের সরবরাহ করা যায়। সমবায়ের মাধ্যমে মানসম্মত কৃষি উপকরণ ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করা যায় বলে পণ্যের মান উন্নত হয়। তাছাড়া মধ্যস্থকারবারিদের এড়িয়ে সরাসরি ভোক্তার কাছে পণ্য বিক্রয় হয় বলে বাজার কৃষকদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। সমবায়ের মাধ্যমে যৌথভাবে পণ্য বাজারজাতকরণ করা হয় বলে কৃষকদের আয় বাড়ে, যা তাদেরকে অর্থ সঞ্চয়ে উৎসাহ যোগায়।
উপরিউক্ত আলোচনা সাপেক্ষ বলা যায়, কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে কৃষিপণ্য বাজারজাত করলে কৃষকগণ ন্যায্যমূল্য পায় এবং ভোক্তাগণ সুলভ মূল্যে ভালো পণ্য পান। ফলে, কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই লাভবান হন।