রিমন বাবার সাথে মাছের বাজারে গিয়ে দেখল একজন মাছ ব্যবসায়ী তার ঝুড়িতে মাছ এবং বরফ স্তরে স্তরে সাজালেন। রিমন বাবাকে জিজ্ঞাসা করল, বাবা লোকটি কী কাজ করল? রিমনের বাবা বললেন, মাছ যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য এই কাজটি করলেন তিনি। তুমি কি জানো রিমন মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন অনেক দূর এগিয়েছে এবং রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে?
মাছ ব্যবসায়ী বরফজাতকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণ করেন। বরফ দিয়ে মাছ সংরক্ষণে সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। বরফ দিয়ে মাছ সংরক্ষণে মাছ টাটকা থাকে। সংরক্ষণ পদ্ধতিটি তুলনামূলকভাবে সহজ। ছোট-বড় সব ধরনের মাছ এই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায়। বরফ তুলনামূলকভাবে সহজলভ্য ও সস্তা তাই খরচ কম হয়। বরফ দিয়ে সংরক্ষিত মাছ সহজে পরিবহন করা যায়। বরফ গলা পানি মাছের দেহে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়া, রক্ত ও ময়লা ধুয়ে সরিয়ে ফেলে। বরফ দিয়ে মাছ সংরক্ষণের অসুবিধা হলো, বরফ টুকরার (বিভিন্ন আকারের) আঘাতে মাছের দেহে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। তাপ কুপরিবাহী পাত্র ব্যবহার করা হয় না বলে বরফের কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বরফ তৈরির পানি অপরিষ্কার হলে মাছের দেহে রোগ জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। তাছাড়া বরফ সংরক্ষণের ব্যবহৃত পাত্র সঠিকভাবে ধোয়া ও জীবাণুমুক্ত না হলে মাছে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে। বরফ ও মাছের অনুপাত সঠিক না হলে মাছের গুণাগুণ নষ্ট হয়।
সুতরাং, বরফজাতকরণ পদ্ধতিতে সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও এ পদ্ধতিতে সংরক্ষিত মাছ ৩-৪ দিন টাটকা থাকে এবং এর গুণাগুণও থাকে টাটকা মাছের মতো। তাই মাছ ব্যবসায়ীর কার্যক্রম অর্থাৎ বরফজাতকরণ মাছ সংরক্ষণের একটি নিরাপদ ও উত্তম পদ্ধতি।