মায়িশা তার নানির সাথে বসে গল্প করছে। মায়িশা শহরে থাকে। তাই সে কখনো নদী দেখেনি। সে তার নানির কাছে নদী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তার নানি বলেন, "নদী হলো এমন জলরাশি, যা প্রবাহিত হয়।”
উদ্দীপকে উল্লিখিত মায়িশার নানির প্রদত্ত সংজ্ঞাটি আভিধানিক বা আক্ষরিক। নিচে তা নিরূপণ করা হলো- কোনো পদের প্রচলিত ব্যবহার থাকলে পদটির যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়, তাকে আভিধানিক বা আক্ষরিক সংজ্ঞা বলে। এ জাতীয় সংজ্ঞার উদ্দেশ্য হচ্ছে পদ বা শব্দের দ্ব্যর্থকতা দূর করা বা ব্যক্তির মনে শব্দের সঞ্চয় বৃদ্ধি করা। সাধারণত এরূপ ক্ষেত্রে পদের সংজ্ঞায় নতুন কোনো শব্দ ব্যবহার করা হয় না; বরং শব্দটির প্রচলিত অর্থকে পরিপূর্ণভাবে ব্যক্ত করা হয়। এ ধরনের সংজ্ঞার সত্যতা বা মিথ্যাত্ব আরোপ করা যায়। যেমন : 'পর্বত' শব্দটি মাটি বা পাথরের স্তূপকে বোঝায়, যা সমতলভূমি থেকে অপেক্ষাকৃত উঁচু। 'পর্বত' সম্পর্কিত এ সংজ্ঞাটি সত্য। কারণ, যারা পর্বতের স্বরূপ সম্পর্কে অবগত, তারা পর্বত বলতে এ ধরনের কিছুকেই বোঝবে। কিন্তু যদি বলা হয়, “পর্বত হলো তিনটি রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ একটি সমতল ক্ষেত্র।" তাহলে 'পর্বত' সম্পর্কিত এ সংজ্ঞাটি মিথ্যা হবে। কারণ, যারা পর্বতের সাথে পরিচিত, তারা সহজেই পর্বতের ক্ষেত্রে সংজ্ঞাটির প্রয়োেগ যে অসঙ্গত তা অনুধাবন করতে পারবে। উল্লেখ্য, আভিধানিক সংজ্ঞায় সংজ্ঞেয় পদের প্রচলিত ব্যবহার রীতির একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয় বলে এরূপ সংজ্ঞাকে প্রতিবেদক (Reportive) সংজ্ঞা নামেও অভিহিত করা হয়।
উপর্যুক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয়, মায়িশার নানির প্রদত্ত সংজ্ঞাটি আভিধানিক বা আক্ষরিক।