সাকিব ও সিয়াম দুই ভাই। দুজনই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। সিয়াম সাকিবের নিকট জানতে চাইল খাদ্য ও পুষ্টি প্রযুক্তিবিদ্যা কাকে বলে? সাকিবের উত্তরে সিয়াম পরিষ্কার হতে পারল না, কারণ সিয়াম আব্বুর যুক্তিবিদ্যার বই লেখায় সহায়তা করতে গিয়ে সংজ্ঞাকরণের যে ধারণা লাভ করেছে তার সাথে সাকিবের জবাব কিছুটা অস্পষ্ট। কারণ যৌক্তিক সংজ্ঞাকরণ একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া হওয়ায় সিয়াম সে ধারণার অনুসারী।
উদ্দীপকের আলোকে যৌক্তিক সংজ্ঞার প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা হলো-
কোনো পদের পূর্ণ জাত্যর্থের সুস্পষ্ট বিবৃতিকে সংজ্ঞা বলে। মূলত কোনো পদের অর্থ ও তাৎপর্য সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার উদ্দেশ্যেই তার সংজ্ঞা নির্দেশ করা হয়। পদটির যথার্থ জাত্যর্থ উল্লেখ করলেই তার অর্থ পরিষ্কার হয়। যেমন : 'মানুষ' পদটির সংজ্ঞা নির্দেশ করতে গিয়ে মানুষের সব রকম গুণ বর্ণনা করা হয় না। কেবল সেই গুণগুলোই বর্ণনা করা হয় যেগুলো সব মানুষেরই সাধারণ ও আবশ্যিক গুণ; যথা : জৈববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি। জৈববৃত্তি 'মানুষ' পদটির জাতিগত লক্ষণ বা গুণ এবং বুদ্ধিবৃত্তি তার উপজাতিগত গুণ। জৈববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি- এ দুটি গুণ যুক্তভাবে 'মানুষ' পদটির জাত্যর্থ। তাই মানুষ পদটির সংজ্ঞা হলো 'মানুষ বুদ্ধিসম্পন্ন জীব।'
সংজ্ঞার প্রকৃতি ব্যাখ্যায় কতিপয় যুক্তিবিদের বক্তব্য এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। যেমন: যুক্তিবিদ ফাউলার এর মতে, "একটি সংজ্ঞা হচ্ছে বস্তুর পদের জাত্যর্থের বিশ্লেষণ। একে সবসময় একটি যুক্তিবাক্যের আকারে প্রকাশ করা যায়, যার মধ্যে সংজ্ঞেয় পদটি উদ্দেশ্য এবং বিশেষণ পদটি বিধেয় গঠন করে।” যুক্তিবিদ ল্যাটা ও ম্যাকবেথ এর মতে, 'একটি সংজ্ঞা হলো কোনো সংজ্ঞায়িত বস্তুর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের বিবৃতি অথবা আধুনিক ভাষায়, এটি হলো একটি পদের সুস্পষ্ট বিবৃতি।'