সাকিব ও সিয়াম দুই ভাই। দুজনই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। সিয়াম সাকিবের নিকট জানতে চাইল খাদ্য ও পুষ্টি প্রযুক্তিবিদ্যা কাকে বলে? সাকিবের উত্তরে সিয়াম পরিষ্কার হতে পারল না, কারণ সিয়াম আব্বুর যুক্তিবিদ্যার বই লেখায় সহায়তা করতে গিয়ে সংজ্ঞাকরণের যে ধারণা লাভ করেছে তার সাথে সাকিবের জবাব কিছুটা অস্পষ্ট। কারণ যৌক্তিক সংজ্ঞাকরণ একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া হওয়ায় সিয়াম সে ধারণার অনুসারী।
উদ্দীপকের আলোকে যৌক্তিক সংজ্ঞার প্রাসঙ্গিকতা মূল্যায়ন করা হলো-
একটি পদের অর্থ সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করা যায় সংজ্ঞার মাধ্যমে। যুক্তির অন্তর্গত যুক্তিবাক্যে যেসব শব্দ বা পদ ব্যবহৃত হয় সংজ্ঞার মাধ্যমে সেগুলোর অর্থ সুনির্দিষ্ট না হলে কখনো যুক্তি বা অনুমানের মধ্যে ভ্রান্তির আশঙ্কা দূর করা যায় না। কাজেই পদের সংজ্ঞাদানের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
আমাদের চিন্তার স্বচ্ছতা অনেকাংশে সংজ্ঞায়নের উপর নির্ভর করে। কারণ, সংজ্ঞার মাধ্যমে পদের সাধারণ ও আবশ্যিক গুণ বা বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রকাশিত হলে তা আমাদের সুষ্ঠু চিন্তার সহায়ক হয়। আমাদের যুক্তি বা অনুমানে এসব শব্দ বা পদ ব্যবহৃত হয়। সংজ্ঞা বস্তুগুলো সম্বন্ধে আমাদের ধারণা সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট করে দেয়। পদসমূহের তাৎপর্য নিশ্চিত করে সংজ্ঞা আমাদের মন থেকে সব রকমের অজ্ঞতা দূর করে। সংজ্ঞা আমাদের নির্ভুল সিদ্ধান্তে আসতে সাহায্য করে। কারণ, সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য প্রয়োজন নির্ভুল অনুমানের। আবার অনুমানের যথার্থতা নির্ভর করে পদ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের উপর। এ জ্ঞান সংজ্ঞাই দিয়ে থাকে।
সঠিক সংজ্ঞা জ্ঞান ছাড়া বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অর্জন সম্ভব হয় না। এ কারণেই অ্যারিস্টটল বলেছেন, "সংজ্ঞাই হচ্ছে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের আদি ও অন্ত।” সংজ্ঞা আমাদের যথার্থ অনুমান করতে সাহায্য করে এবং যুক্তিহীন বিতর্কের হাত থেকে রক্ষা করে। যৌক্তিক সংজ্ঞার জ্ঞান যৌক্তিক বিভাজনের জন্য সহায়ক। কারণ, কোনো শ্রেণিকে তার অধীন শ্রেণিতে বিভাজন করতে হলে তার আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ সম্পর্কে জ্ঞান প্রয়োজন।