অফিস থেকে ফিরে মি. শাহিন তার স্ত্রীকে বললেন, "মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী। এ কথা এক সময় বলা হলেও আজকাল আর বলা হয় না। আমার মনে হয়, সবাই আমরা পশুর মতো হয়ে যাচ্ছি। আমাদের বিবেক-বুদ্ধি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।" উত্তরে স্ত্রী বললেন, "মানুষ হয় হাত, পা, চোখ, কানবিশিষ্ট প্রাণী। তাছাড়া মানুষ হাসতে জানে, গাইতে জানে এবং নাচতেও জানে। মানুষের ক্ষুধা ও তৃষ্ণা আছে।"
উদ্দীপকে শাহিন সাহেবের বক্তব্যটি হলো 'মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী, যা আমার পাঠ্যবইয়ে পঠিত সংজ্ঞার বিষয়টিকে নির্দেশ করে। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো- উদ্দীপকে শাহিন সাহেবের বক্তব্যটি হলো 'মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী'-
এ বক্তব্যটিতে 'মানুষ' পদের পূর্ণ জাত্যর্থ উল্লেখ করে সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। সাধারণত একটি পদের জাত্যর্থ গঠিত হয় তার আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ দ্বারা। আসন্নতম জাতির মাধ্যমে পদটি কোন জাতি বা শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত, তা উল্লেখ করা হয় এবং বিভেদক লক্ষণের মাধ্যমে পদটির সাথে অন্যান্য উপজাতির স্বাতন্ত্র্য নির্দেশ করা হয়। কাজেই এভাবে আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণের উল্লেখের মাধ্যমে যেকোনো পদকেই সংজ্ঞায়িত করা যায়। যেমন : 'মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব'- এ দৃষ্টান্তে মানুষ পদটির আসন্নতম জাতি হচ্ছে 'জীব' এবং বিভেদক লক্ষণ হচ্ছে 'বুদ্ধিবৃত্তি'। এখানে 'জীব' শব্দটির মাধ্যমে মানুষ কোন শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত, তা নির্দেশ করা হয়েছে। আর 'বুদ্ধিবৃত্তি' শব্দটির মাধ্যমে মানুষকে জীবের অন্তর্গত অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক করা হয়েছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, সংজ্ঞাদানের একটি অত্যন্ত সহজ কৌশল হচ্ছে কোনো পদের সংজ্ঞায় তার আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ উল্লেখ করা।
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপকে শাহিন সাহেবের বক্তব্যটি সংজ্ঞাকে নির্দেশ করে।