কোনোমতে নিম্ন মাধ্যমিক পাস করে ঘরে বাবা মায়ের বোঝা হয়েই দিন কাটাচ্ছিল স্বপ্না। হঠাৎ সমাজকর্মী সাথী স্বপ্নার জন্য একটি সুখবর নিয়ে এল। স্বপ্নার মা যে প্রতিষ্ঠানে এ কুটির শিল্পের কাজ করেছেন, তা বিক্রয়ে ঢাকায় কিছু মেয়েদের নিয়োগ দেওয়া হবে। সাথীর পরামর্শ মতো আরও দু'চারজন এ সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় আড়ং বিপণন কেন্দ্রে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে পা রাখল।
হ্যাঁ, শুধু স্বপ্নার ক্ষেত্রে নয় বরং ব্র্যাকের সার্বিক কর্মসূচিতে সমাজকর্মের পদ্ধতি অনুশীলন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের দুস্থ, অসহায় মানুষের সুপ্ত ক্ষমতার বিকাশ এবং তাদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে এর কর্মপরিধি ঋণ প্রদান ও আদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে সংস্থাটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানব সম্পদ উন্নয়ন, ঋণদান, আইনি সহায়তা সর্বোপরি পল্লি উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেহেতু এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী মানবসেবামূলক প্রতিষ্ঠান সেহেতু সমাজকর্মের দর্শন, মূল্যবোধ ও পদ্ধতি এখানে ব্যবহৃত হয়।
ব্র্যাকের ঋণদান কর্মসূচি দলীয় ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এখানে দল সমাজকর্মের প্রক্রিয়া ও কৌশল প্রয়োগ দেখা যায়। এছাড়া এর আওতায় গ্রামীণ নিরক্ষর, অজ্ঞ ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সমষ্টি সমাজকর্মের পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। ব্র্যাকের অন্যতম সফল কর্মসূচি হলো স্যালাইন তৈরি। পাশাপাশি আইনগত সহায়তা প্রদানেও ব্র্যাকের কর্মসূচি পরিচালিত হয়। সর্বোপরি সমষ্টি জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ব্র্যাকের কার্যক্রম আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। কেননা সমাজকর্ম যেমন সমস্যাগ্রস্ত দল ও সমষ্টি নিয়ে কাজ করে থাকে তেমনিভাবে ব্র্যাকও সমাজের দরিদ্র, ভূমিহীন ও দুস্থদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। আর এসব কর্মসূচিতে সমাজকর্মের মৌলিক ও সহায়ক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
পরিশেষে বলা যায়, ব্র্যাকের কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমাজকর্মের পদ্ধতির অনুশীলন লক্ষ করা যায়।