Academy

দশ বছর বয়সের ললিতা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে চকলেট বিক্রি করে। এতে যে রোজগার হয় তা দিয়ে অসুস্থ বাবা-মায়ের ওষুধ ও খাবারের যোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই সে কর্মজীবী শিশুদের জন্য স্থাপিত একটি স্কুলে ভর্তি হলো। চকলেট বিক্রি করার পর সে স্কুলে যায়। ললিতার ভর্তি হওয়া স্কুলে ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ললিতার ইচ্ছা পড়াশোনা করে নিজেকে দেশের দক্ষ মানবশক্তিতে পরিণত করবে। 
বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে। তাদের সব দুঃখ দূর করে দেবে। 

উক্ত সংগঠন ললিতার ইচ্ছাপূরণ করতে পারবে কি? মতের পক্ষে যুক্তি দাও। (উচ্চতর দক্ষতা)

dsuc.created: 1 month ago | dsuc.updated: 1 month ago
dsuc.updated: 1 month ago

উক্ত সংগঠন অর্থাৎ ইউসেপ ললিতার ইচ্ছা পূরণ করতে পারবে বলে আমি মনে করি।

শিশু-কিশোরদের কল্যাণার্থে বাংলাদেশে যে কয়টি বেসরকারি সংগঠন কাজ করে তাদের মধ্যে ইউসেপ অন্যতম। সমাজের বঞ্চিত ও কর্মজীবী শিশুদের ভাগ্য উন্নয়নে এ সংস্থাটি বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব উদ্যোগের আওতায় কর্মজীবী শিশুদের পরিচালিত করতে পারলে তারা আর দেশের বোঝা হয়ে থাকবে না। অর্থাৎ এতে ললিতার মতো শিশুদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে। ললিতার ইচ্ছা হলো শিক্ষিত হয়ে নিজেকে দেশের দক্ষ মানবশক্তিতে পরিণত করবে। মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবে। তাদের সব দুঃখ দূর করে দেবে। তার মতো শিশুদের এই ধরনের ইচ্ছা পূরণে ইউসেপ বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালিত করছে। যেমন- এগারো বছরের শ্রমজীবী শিশুদের জন্য ইউসেপ চার বছর মেয়াদী সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আবার তাদেরকে বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ইউসেপের সাধারণ স্কুলে সাড়ে চার বছর শিক্ষা শেষ করার পর তার ভিত্তিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের কারিগরি স্কুলে ভর্তি করা হয়। ইউসেপের টেকনিক্যাল স্কুলগুলোতে যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেগুলো হলো-আশা ওয়েল্ডিং এবং ফেব্রিকেশন, অটোমেকামিক্স, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি, রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশনিং ইত্যাদি। এর ফলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কারিগর হিসেবে নিয়োজিত হতে পারছে। ইউসেপ বাংলাদেশ কর্মীদের পেশাগত দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি উন্নয়নের জন্য ১৯৯০ সালে একটি ট্রেনিং সেল স্থাপন করে। এখানে কয়েকজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও প্রশিক্ষণ দানে অংশ নেন। এছাড়া ইউসেপ বাংলাদেশের মাধ্যমে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শেষে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হয়। যারা ইউসেপের সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার সুযোগ পায় না; তাদের জন্য ইউসেপ প্যারাট্রেড প্রশিক্ষণ ইউনিট পরিচালিত হচ্ছে। এতে কাপড়ে ব্লক ও প্রিন্ট করা, কাঠের কাজ, মোটরযান মিস্ত্রী, বিজ্ঞপ্তি লেখা ইত্যাদি শেখানো হয়।

পরিশেষে বলা যায়, কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের নিয়ে পরিচালিত ইউসেপের কর্মসূচির মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্ন কাজে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়। এতে তারা দক্ষ মানবশক্তি হিসেবে তৈরি হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থারও পরিবর্তন করতে পারে। তাই বলা যায়, ইউসেপের বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় ললিতার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব।

1 month ago

সমাজকর্ম

Please, contribute to add content.
Content
Promotion