১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের একটি গ্রাম থেকে ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তা বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন এবং নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানটি নোবেল পুরস্কার লাভ করে।
হ্যাঁ, গ্রামীণ ব্যাংক দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে দারিদ্র্য বিমোচনমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কৃষিনির্ভর এদেশে অবহেলিত, দরিদ্র ও ভূমিহীন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সংস্থাটি নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের ভূমিহীন জনগণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে। এর প্রভাব সামাজিক উন্নয়নেও পড়ছে। এছাড়া ঋণ পরিশোধের উচ্চহার, ঋণের যথাযথ প্রয়োগ, দরিদ্র মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আয় বৃদ্ধিকারী কর্মকান্ডের প্রসার ঘটানো এ সংস্থার বৈশিষ্ট্য। এর ফলে ব্যাংকের ঋণগ্রহীতা দরিদ্র শ্রেণি নিজেদের সংগঠিত শক্তিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে। সেইসাথে সম্পদশালী ও সুদখোর মহাজনদের ওপর নির্ভরশীলতার হারও কমে আসছে। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষিত যুব শ্রেণিকে দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের কর্মচারিরূপে বিপুল সংখ্যকশিক্ষিত বেকারের কাজের ব্যবস্থা যেমন হচ্ছে তেমনিভাবে ঋণদান প্রক্রিয়ায় দরিদ্র পুরুষ ও মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলা সম্ভব হচ্ছে। মূলত গ্রামীণ ব্যাংক তার কর্মসূচির মাধ্যমে 'দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যাংক' এই ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। যে কারণে তাদের উদ্ভাবিত ক্ষুদ্রঋণ মডেল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক হারে প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে।
সার্বিক আলোচনা থেকে তাই বলা যায়, গ্রামীণ ব্যাংক দরিদ্র পুরুষ ও মহিলাদের ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।