ব্যারোনেস সৈয়দা ওয়ার্সী ব্রিটেনের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল ও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আপাদমস্তক তিনি একজন রাজনীতিবিদ এবং মেধা ও যোগ্যতা বলে বর্তমানে এ পদে আসীন হয়েছেন। তিনি ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত নন; এমনকি সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের। বিষয় দুটির কোনোটিই তার রাজনীতির পথ চলায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ব্রিটেনের রাজনীতিতে এ ধরনের নেতিবাচক মনোভাব, বিশ্বাস ও মূল্যবোধ প্রাধান্য পায় না।
উদ্দীপকে উল্লিখিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির ক্ষেত্রে গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক দলের জোরালো ভূমিকা রয়েছে-
নিম্নোক্ত গণতন্ত্র হলো জনপ্রতিনিধি কর্তৃক পরিচালিত শাসনব্যবস্থা। পারিবারিক বিশ্বাস, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সমঝোতার মনোভাব এবং গণরায়ের ওপর নির্ভরশীলতাই হলো গণতন্ত্রের সাফল্যের চাবিকাঠি। এদিক থেকে বলা যায়, রাজনৈতিক সংস্কৃতি যদি সংকীর্ণ হয় অথবা অধীন হয় তাহলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুন্দরভাবে কার্যকর হয় না। গণতন্ত্রের জন্যে প্রয়োজন অংশগ্রাহক রাজনৈতিক সংস্কৃতি। এ ব্যবস্থায় সকলের অংশগ্রহণের মানসিকতা বিদ্যমান থাকে। ভিন্নমত থাকলেও থাকবে না কোনো বৈরিতা। প্রতিপক্ষ থাকবে কিন্তু প্রতিপক্ষকে সবসময় শত্রু হিসেবে দেখার মানসিকতা থাকবে না। শুধু থাকবে সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিন্তু থাকবে না কোনো প্রতিহিংসা। তাই বলা যায়, সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্যে চাই উন্নত গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি।
প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক সংস্কৃতি হলো মানুষের মনোভাব, বিশ্বাস, অনুভূতি ও মূল্যবোধের সমষ্টি। এগুলোকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির এসব উপাদান রাজনৈতিক দল গঠনেও সাহায্য করে। কেননা রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠে সমমনা মানুষদের নিয়ে। মনোভাব, বিশ্বাস, অনুভূতি ও মূল্যবোধের মিল থাকলেই কিছুসংখ্যক মানুষ ন্যূনতম ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচির ভিত্তিতে একতাবদ্ধ হয় এবং রাজনৈতিক দল গড়ে তোলে। এজন্যেই একটি রাজনৈতিক দলের সাথে অপর একটি রাজনৈতিক দলের বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গিজনিত পার্থক্য লক্ষ করা যায়। যে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি যত বেশি উন্নত, সে দেশের রাজনীতির মানও ততো উন্নত। উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতিসম্পন্ন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোও ততো বেশি সুসংহত, আদর্শকেন্দ্রিক ও কর্মসূচিভিত্তিক। সুতরাং বলা যায়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অনস্বীকার্য।