শিউলি আক্তার শ্রেণিতে পরিবেশ পরিচিতি পড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, পরিবেশের অনেক উপাদান আছে। এসব উপাদানের মধ্যে যাদের প্রাণ আছে সেগুলো জীব। আর পরিবেশের যেসব উপাদানের প্রাণ নেই সেগুলো জড়। তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা পরিবেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান জানতে পারে।
উদ্দীপকে জনাব শিউলি আক্তারের শ্রেণিকরণ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ। নিচে তা নিরূপণ করা হলো :
সাধারণত বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ করা হয়। কাজেই বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে এবং সাধারণ জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে মৌলিক, গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য সাদৃশ্যের ভিত্তিতে জাগতিক বস্তু বা ঘটনাবলিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিন্যস্ত করার মানসিক প্রক্রিয়াকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলে। প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলা যায়, কোনো উদ্দেশ্যের কথা স্মরণ রেখে বিজ্ঞানীরা যখন শ্রেণিকরণ করেন তখন তাকে বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ, সাধারণ শ্রেণিকরণ, তত্ত্বীয় শ্রেণিকরণ বা প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলা হয়। কোনো বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে সেই বিষয়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য অনুসারে বস্তুকে শ্রেণিবদ্ধ করার নাম বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ, সাধারণ শ্রেণিকরণ বা প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ। বস্তুত প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণে বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য নিহিত থাকে বলে একে বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ বলা হয়। আবার এরূপ শ্রেণিকরণের মাধ্যমে শ্রেণিবদ্ধ বস্তুসমষ্টি সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান অর্জিত হয় বলে একে সাধারণ শ্রেণিকরণও বলা হয়। মূলত তত্ত্বগত জ্ঞান অর্জন এবং সেই তত্ত্বকে সুসংবদ্ধকরণই এরূপ শ্রেণিকরণের প্রধান কাজ। তাই একে তাত্ত্বিক শ্রেণিকরণ বলেও অভিহিত করা হয়। সর্বোপরি, এরূপ শ্রেণিকরণকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলা হয় এজন্য যে, এক্ষেত্রে শ্রেণিকরণের ভিত্তি হিসেবে সাদৃশ্যের বিষয়সমূহ প্রকৃতির মাঝেই নিহিত থাকে, যেগুলোকে কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করার কোনো প্রয়োজন হয় না। উদাহারণস্বরূপ, বস্তুজগতের মধ্যে প্রাণের উপস্থিতির সাদৃশ্যের ভিত্তিতে 'জীব' শ্রেণিটি গঠন করা হয়েছে এবং প্রাণের অনুপস্থিতির সাদৃশ্যের ভিত্তিতে 'জড়' শ্রেণিটি গঠন করা হয়েছে। এরূপ শ্রেণিকরণই হচ্ছে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ। কারণ এক্ষেত্রে সাদৃশ্যের বিষয় হিসেবে প্রাণের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির বিষয়টি প্রকৃতি প্রদত্ত, মানবসৃষ্ট নয়। আর এরূপ শ্রেণিকরণ করা হয়েছে মূলত মানুষের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অর্জনের সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে।