শিউলি আক্তার শ্রেণিতে পরিবেশ পরিচিতি পড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, পরিবেশের অনেক উপাদান আছে। এসব উপাদানের মধ্যে যাদের প্রাণ আছে সেগুলো জীব। আর পরিবেশের যেসব উপাদানের প্রাণ নেই সেগুলো জড়। তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা পরিবেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান জানতে পারে।
উদ্দীপকের শিউলি আক্তারের শ্রেণিকরণের আলোকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের নিয়মগুলো বিশ্লেষণ করা হলো :
এক. যেসব বস্তুর মধ্যে সর্বাধিকসংখ্যক ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অভিন্ন গুণাবলি রয়েছে, সেগুলোকে একই শ্রেণিতে অবস্থান দিতে হবে।
এই নিয়ম অনুসারে, প্রাকৃতিক বস্তুসমূহকে শ্রেণিকরণ করতে হবে বস্তুগুলোর অন্তর্গত অধিকসংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ সাদৃশ্যের ভিত্তিতে। যুক্তিবিদ বেইন প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের এই নিয়মটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
দুই. শ্রেণিসমূহকে তাদের সাদৃশ্যের মাত্রা অনুসারে বিন্যস্ত করতে হবে। এ নিয়ম অনুসারে, বস্তুসমূহের মধ্যে কোনো একটি বিশেষ গুণ বিভিন্ন মাত্রায় উপস্থিত থাকলে, সেই মাত্রার সাদৃশ্যের ক্রম অনুসারে বস্তুসমূহকে শ্রেণিবিন্যাস করতে হয়। যেমন : 'প্রাণ' গুণটির উপস্থিতির মাত্রাগত সাদৃশ্যের ক্রম অনুসারে প্রথমে মানুষ, এরপর অন্যান্য জীব এবং সবশেষে উদ্ভিদকে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। উল্লেখ্য যে, এই নিয়মটির প্রয়োগেই মূলত 'ক্রমিক শ্রেণিকরণ' গঠিত হয়ে থাকে।
তিন. সর্বোচ্চ শ্রেণিতে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত শ্রেণিকরণকে ক্রমানুসারে ঊর্ধ্বমুখে এগিয়ে যেতে হবে। এই নিয়ম অনুসারে, শ্রেণিকরণের ক্ষেত্রে ছোট শ্রেণিগুলোকে তার চেয়ে বড় কোনো শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এভাবে গঠিত কয়েকটি বড় শ্রেণিকে আবার তার চেয়ে বৃহত্তম শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এভাবে সর্বোচ্চ শ্রেণিতে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত শ্রেণিকরণের প্রক্রিয়াটি ক্রমান্বয়ে ঊর্ধ্বমুখে অগ্রসর হতে থাকে।
উল্লেখ্য যে, প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের যথার্থতা প্রতিপাদনের ক্ষেত্রে আলোচ্য নিয়মগুলোর প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি। বস্তুত এই নিয়মগুলো পালনের মাধ্যমেই একটি সাধারণ শ্রেণিকরণ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের রূপ লাভ করতে সক্ষম হয়।