একজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী যখন বিভিন্ন গাছগাছড়ার রোগ নিরাময় ক্ষমতার ভিত্তিতে এগুলোর বিন্যাস করেন, সেটি হবে নিজস্ব বা ব্যবহারিক। কারণ এখানে গাছগাছড়ার মৌলিক সাদৃশ্য বাদ দিয়ে বিশেষ ব্যক্তির নিজস্ব প্রয়োজনে তারই ইচ্ছামতো বা মনগড়া সৃষ্ট কতকগুলো বাহ্যিক সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে করা হয়। কিন্তু গাছগাছড়াকে যখন ফুলের ভিত্তিতে সপুষ্পক ও অপুষ্পক ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয় তখন তা স্বাভাবিক বিন্যাস।
উদ্দীপকে নির্দেশিত প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ ও কৃত্রিম শ্রেণিকরণের মধ্যে তুলনামূলক পার্থক্য নিচে বর্ণনা করা হলো-
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের ভিত্তি হলো মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ সাদৃশ্য। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণের ভিত্তি হলো অবাস্তব ও বাহ্যিক সাদৃশ্য।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য হলো সর্বজনীন জ্ঞান অর্জন। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিবিশেষের বিশেষ প্রয়োজন মেটানো।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের সাদৃশ্যের বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকৃতিতে বিদ্যমান থাকে। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণে সাদৃশ্যের বিষয়বস্তু মানুষের খেয়াল-খুশিমতো সৃষ্টি করা হয়।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এ জাতীয় শ্রেণিকরণে বস্তুসমূহ যথাযথভাবে বিন্যাস করা হয়। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণ একটি অবৈজ্ঞানিক ও ব্যবহারিক পদ্ধতি।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের ক্ষেত্রে আমরা বস্তু বা ঘটনাবলি সম্পর্কে তত্ত্বগত জ্ঞান লাভ করি। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণে কেবল ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধিত হয়। এতে জ্ঞান অর্জনের সম্ভাবনা কম।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণে বস্তুসমূহের গুরুত্বপূর্ণ ও একান্ত প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্যগুলোকে শনাক্ত করতে হয়। এর জন্য আমাদের সংজ্ঞার উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণ বাহ্যিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতেই করা হয়। এজন্য অনেক সময় একটি নমুনা নির্বাচিত করা হয় এবং এর সাথে মিল রেখেই বস্তুসমূহকে বিন্যস্ত করা হয়।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বিজ্ঞানসম্মত। তাই ব্যক্তিভেদে শ্রেণিকরণের মধ্যে কোনো তারতম্য ঘটে না। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণ ব্যক্তিবিশেষের উদ্দেশ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় বলে এরূপ শ্রেণিকরণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়।