মি 'Y' একজন প্রখ্যাত উদ্ভিদবিজ্ঞানী। বিভিন্ন সময় তিনি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করেন। এমনকি তিনি দেশে- বিদেশে প্রায় সময়ই গবেষণায় সময় কাটান। তিনি ভালো করে লক্ষ করেন, কোনো উদ্ভিদের বীজ এককোষী আবার কোনো উদ্ভিদের বীজ বহুকোষী। এ ভিত্তিতে তিনি উদ্ভিদকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেন এবং বিষয়টি সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। তার এরূপ গবেষণার খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল।
উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ হচ্ছে মূলত বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ। কারণ এ ধরনের শ্রেণিকরণ বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রাণিবিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার মাধ্যমে লক্ষ করেছেন, কোনো কোনো বীজ একপত্রী, আবার কোনো কোনো বীজ দ্বিপত্রী। এ বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বীজকে একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী- এ দুটি শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হলে তা হবে বীজের প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ। এরূপ প্রাণিজগতের মধ্যে যাদের মেরুদণ্ড আছে এমন মিল দেখে সব প্রাণীকে মেরুদন্ডী প্রাণী এবং যাদের মেরুদণ্ড নেই এমন মিল দেখে সব প্রাণীকে অমেরুদণ্ডী প্রাণী শ্রেণিসমূহে বিন্যস্ত করা হলে তাকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলা হবে। এর মূল কারণ হলো এক্ষেত্রে যে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ মিলের ভিত্তিতে বিষয় বা ঘটনাবলিকে একত্রে সন্নিবেশিত করা হয়, তা একমাত্র প্রকৃতি দ্বারা নির্ধারিত। একমাত্র প্রকৃতি দ্বারা নির্ধারিত থাকার কারণে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যে মিল দেখে বিভিন্ন বস্তু বা ঘটনাবলি সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক সত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, এজন্য এ শ্রেণিকরণ বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণের আওতাভুক্ত।
সাধারণত বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ করা হয়। কাজেই বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে এবং সাধারণ জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে মৌলিক, গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য সাদৃশ্যের ভিত্তিতে জাগতিক বস্তু বা ঘটনাবলিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিন্যস্ত করার মানসিক প্রক্রিয়াকে প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বলে।
বস্তুত প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণে বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য নিহিত থাকে বলে একে বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ বলা হয়।