আমরা মানুষ, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, গরু, ছাগল ইত্যাদি প্রজাতির মধ্যে মাংসপেশি, রক্তসঞ্চালন, শ্বাসক্রিয়া, চেতনা, সুখ- দুঃখের অনুভূতি ইত্যাদির সাদৃশ্য লক্ষ করি। তারপর মানুষকে • অন্যান্য প্রজাতির সাথে একত্রীকরণ করে প্রাণীজাতির অন্তর্ভুক্ত করি।
প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ ও কৃত্রিম শ্রেণিকরণের মধ্যে প্রকৃতিগত দিক থেকে পার্থক্য বিদ্যমান; যথা :
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের ভিত্তি হলো বস্তু বা বিষয়সমূহের মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ সাদৃশ্য। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণের ভিত্তি হলো অবান্তর ও বাহ্যিক সাদৃশ্য।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য হলো সর্বজনীন জ্ঞান অর্জন। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিবিশেষের সাময়িক প্রয়োজন মেটানো।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সত্য প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে একে বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ বলে। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণের মাধ্যমে সাময়িক কার্যসিদ্ধ করা হয় বলে একে অবৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণ বলে।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ হলো একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। আর কৃত্রিম শ্রেণিকরণ হলো লৌকিক প্রক্রিয়া।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণে সাদৃশ্যের বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকৃতিতে বিদ্যমান থাকে। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণে সাদৃশ্যের বিষয়বস্তু মানুষের প্রয়োজন সাপেক্ষে খেয়াল-খুশিমতো সৃষ্টি করা হয়।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ সাধারণ সত্য প্রতিষ্ঠা করে আমাদের জ্ঞানের পরিসর বিস্তৃত করে। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণ ব্যক্তির সাময়িক উদ্দেশ্য সাধন করে বলে জ্ঞানের পরিসর সীমিত থাকে।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ বৈজ্ঞানিক হওয়ায় এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অনুসরণ করা আবশ্যক। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণে কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করার অনিবার্যতা নেই।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণ ব্যক্তি; নিরপেক্ষ ও বস্তুসাপেক্ষ কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণ ব্যক্তিসাপেক্ষ ও বস্তুনিরপেক্ষ।
⇨ প্রাকৃতিক শ্রেণিকরণের মাধ্যমে বিষয় বা ঘটনাবলি সম্পর্কে তাত্ত্বিক জ্ঞান লাভ করা সম্ভব হয়। কিন্তু কৃত্রিম শ্রেণিকরণের মাধ্যমে নিছক ব্যবহারিক উদ্দেশ্য সাধন সম্ভব হয়।