রহমত আলী একজন দরিদ্র কৃষক। কৃষিকাজ করে তার সংসার ঠিকমতো চলে না। তাই সে বিকেলে মাঝে মাঝে রিক্সা চালায়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে এক আত্মীয়ের পরামর্শে ডাক্তারের কাছে যায় ডাক্তার তার বয়স ৫০ এবং ওজন ৬০ কেজি জেনে নিয়ে শক্তির চাহিদা নির্ণয় করে সে অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিলেন।
ডাক্তার সাহেব মৌলিক বিপাকক্রিয়া, শারীরিক পরিশ্রম, খাদ্যের প্রভাব, ইত্যাদি বিষয়সমূহ বিবেচনা করে রহমত সাহেবের শক্তির চাহিদা নির্ণয় করলেন। দেহের অভ্যন্তরের অত্যাবশ্যকীয় জৈবিক কাজের জন্য যেমন শক্তির প্রয়োজন, তেমনি শারীরিক বিভিন্ন কাজ কর্ম, চলাফেরা, কায়িক পরিশ্রমেও যথেষ্ট পরিমাণে শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই শক্তির চাহদিা নির্ণয়ে মৌলিক বিপাকক্রিয়া, শারীরিক পরিশ্রম, খাদ্যের প্রভাব ইত্যাদি বিবেচনা করা হয়।
সম্পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় কেবল অভ্যন্তরীণ শারীরিক কার্যকলাপের জন্য যে ন্যূনতম শক্তি ব্যয় হয়, তাকে মৌলিক শক্তি ব্যয় বলে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতি কিলোগ্রাম 'ওজনের জন্য প্রতি ঘণ্টায় ১ কিলোক্যালরি পরিমাণ শক্তি মৌলিক বিপাকের জন্য দরকার। রহমত আলী যেহেতু একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ তাহলে তারও প্রতি ঘণ্টায় ১ কিলোক্যালরি শক্তি মৌলিক বিপাকের জন্য দরকার। শারীরিক কার্যকলাপের উপর শক্তি ব্যয় নির্ভর করে। মৌল শক্তির চাহিদা ও দৈহিক কার্যকলাপের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদা যোগ করেই একজন ব্যক্তির শক্তির চাহিদা নির্ণয় করা হয়। সাঁতার কাটা, রিকশা চালানো গাছ কাটা ইত্যাদি ভারি কাজের জন্য প্রতি ঘণ্টায় ৪৫০-৫৯০ ক্যালরি ব্যয় হয়। রিকশা চালানোর জন্য রহমত আলীর প্রতি ঘণ্টায় ৪৫০- ৫৯০ ক্যালরি ব্যয় হয়। খাদ্য থেকে আমরা শক্তি পেয়ে থাকি। আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পরিমাণ মত খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তা না হলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। রহমত আলী পরিশ্রম অনুযায়ী পরিমত খাত্য গ্রহণ না করায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই ডাক্তার তাকে চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দেন।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, শারীরিক পরিশ্রম, মৌল বিপাক ক্রিয়া, খাদ্যের প্রভাব, দেহের চাহিদা অনুযায়ী শক্তি চাহিদায় পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।